১ হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোট বাতিলের জেরে সঙ্কটে হাইলাকান্দি-সহ বরাকের বিভিন্ন চা বাগান। আচমকা এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের নগদে বেতন দিতে পারছে না চা বাগান কর্তৃপক্ষ। উপত্যকার হাজার হাজার চা শ্রমিকের সংসারে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দু’বেলা খাবার টাকাও নেই অনেকের ঘরে।
হাইলাকান্দিতে ১৭টি চা বাগান রয়েছে। গোটা বরাকে সেই সংখ্যা প্রায় ৬০টি। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার ব্যবস্থা এখনও সেখানে চালু হয়নি। প্রতি সপ্তাহে শ্রমিকদের মজুরির টাকা মেটানো হয় নগদেই। আগামী কাল ও শনিবার হাইলাকান্দির কয়েকটি চা বাগানে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার দিন। সাধারণ ভাবে একটি চা বাগানে শ্রমিকদের মজুরির জন্য নগদে কয়েক লক্ষ টাকা দরকার হয়। কিন্তু ১ হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোট বাতিল, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার উর্ধ্বসীমা থাকায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ অন্য কোনও ভাবে টাকা জোগাড়ের উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না।
পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে আজ হাইলাকান্দির জেলাশাসক মলয় বরা এক জরুরি বৈঠকে বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি, চা বাগান কর্তৃপক্ষ, প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হলেও কার্যত কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে বাগান কর্তৃপক্ষকে চাহিদামতো টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা। এই পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক দিন বরাকের চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি মেটানোর ক্ষেত্রে জটিলতা থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীননাথ বারই জানান, বাগান কর্তৃপক্ষের হাতে প্রয়োজনীয় টাকা নেই। তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতি থাকলে অনেক চা বাগানে কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।’’
হাইলাকান্দির অন্যতম বৃহৎ চা বাগান আয়নাখালের জেনারেল ম্যানেজার অলোক মহাবীর বলেন, ‘‘আগামী শনিবার শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার কথা। কিন্তু নোটের সমস্যা থাকায় ওই দিন মজুরি মেটানোর সম্ভবনা কার্যত নেই।’’