ভীমাভা।
খরার কারণে ২৭ বছর আগে গ্রাম ছেড়েছিলেন। দু’একরের মতো নিজেদের জমি খরার প্রকোপে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। অগত্যা পেটের টানে পরিবার নিয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন ভীমাভা। কর্নাটকের বাগালকোট জেলার কাটাগেরি থেকে কাজের খোঁজে পাড়ি দিয়েছিলেন উদুপী জেলার তালুরুতে। দিন আনা দিন খাওয়া সেই মহিলাই এখন তালুরুর পঞ্চায়েত সভাপতি।
কোনও দিন খেতে পেয়েছেন, তো কোনও দিন আবার কিছুই জোটেনি। পরিবারের সদস্যদের পেট ভরাতে তালুরুতে এসেই দিনমজুরির কাজ নেন ভীমাভা। তাঁর সততার জন্য তালুরুর এক বাসিন্দা নিজের খামারে কাজ দেন ভীমাভাকে। সেই থেকেই দিনমজুর হিসেবে কাজ করে আসছেন তিনি।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত সভাপতির পদের জন্য নির্বাচন হয় তালুরুতে। খামারের মালিক ভীমাভাকে ওই পদের জন্য আবেদন করার পরামর্শ দেন। ওই পদটি সংরক্ষিত ছিল তফশিলি জাতির জন্য। তাই খামারের মালিক ভীমাভাকে বুঝিয়ে ওই পদের জন্য লড়াইয়ে রাজি করান। এবং আশ্চর্যজনক ভাবে ১৬২ ভোটে জয় হয় তাঁর।
পঞ্চায়েত সভাপতি হয়েও কিন্তু নিজের শিকড়ের টান ভোলেননি ভীমাভা। তিনি এখনও দিনমজুর হিসেবেই কাজ করেন। তবে পূর্ণ সময়ের জন্য নয়। দিনের অর্ধেক সময় পঞ্চায়েত অফিসের কাজ সামলান, বাকি অর্ধেক সময় খামারে কাজ করেন।
ভীমাভার চার সন্তান। তাঁর ছোট ছেলে ভারতীয় সেনায় কর্মরত। ভীমাভা বলেন, “নিজের এবং পরিবারের ভোটার, আধার-সহ গুরুত্বপূর্ণ নথি জোগাড়ে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল। সরকারি অফিসে এ সব পেতে গেলে কী ঝক্কি পোহাতে হয়, তার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। তবে এখন থেকে এই সমস্যা হবে না আমার এলাকার মানুষের। ক্ষমতায় যখন এসেছি, এই সমস্যা দূর করবই।”