—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উপস্থিত বুদ্ধির জোরে অল্পের জন্য তিনি বেঁচে ফিরেছেন, এমনটাই মনে করছেন বেঙ্গালুরুর এক তরুণী। সম্প্রতি সেই শহরের কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দরে ভুয়ো অ্যাপ ক্যাব চালকের পাল্লায় পড়েন তিনি। সমাজমাধ্যমে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে তিনি লিখেছেন, আর একটু হলে হয় তিনি পাচার হয়ে যেতেন, নয় কপর্দকহীন, জখম অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকতেন। ধর্ষণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। মাথা ঠান্ডা রেখে আপৎকালীন সহায়তার নম্বর ১১২ ডায়াল করেছিলেন ফোনে, পুলিশের হস্তক্ষেপে তিনি রক্ষা পান। বাসবরাজ নামের ওই চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তরুণীর এই পোস্টের পরেই নেটিজেনদের মধ্যে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ও অসন্তোষ উঠে এসেছে। তাঁদের দাবি, বেঙ্গালুরুতে এই ধরনের ভুয়ো অ্যাপ ক্যাবের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, অনেকেই হেনস্থার শিকার হয়েছেন। প্রশাসন নির্বিকার।
পেশায় জুনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক ওই তরুণীর নাম নিকিতা মালিক। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, বিমান থেকে নেমে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তিনি একটি অ্যাপ ক্যাব বুক করেন। ক্যাবে ওঠার নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে তিনি অপেক্ষা করছিলেন, এমন সময় বাসবরাজ তার গাড়ি নিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায়। দাবি করে, মহিলা তার গাড়িটিই বুক করেছেন। গাড়িতে ওঠার পরেই অবশ্য তরুণীর সন্দেহ শুরু হয়। বাসবরাজ তাঁর কাছ থেকে ওটিপি চায় না। তরুণীর দাবি, তিনি যে সংস্থার ক্যাব বুক করেছিলেন তাঁদের ক্ষেত্রে সফর শুরু হওয়ার আগে ওটিপি বাধ্যতামূলক। প্রশ্ন তুললে বাসবরাজ জানায়, তার অ্যাপটি গন্ডগোল করায় ওটিপি নিতে পারছে না সে। গুগল ম্যাপ খুলে ওই তরুণীকে তাঁর গন্তব্য লিখে দিতে বলে।
গাড়ি কিছু দূর এগোনোর পরেই বাসবরাজ দাবি করে তাকে বেশি টাকা দিতে হবে। তরুণী প্রতিবাদ করলে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। ওই চালক তাঁকে ভয় দেখায় অন্য গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার। ওই তরুণী তত ক্ষণে বিপদ বুঝে যোগাযোগ করেছেন এক আত্মীয়ের সঙ্গে। চালককে বলেছেন, তাঁকে বিমানবন্দরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। সেই কথায় কর্ণপাত না করে রাস্তার পাশে একটি পেট্রল পাম্পে গাড়ি থামায় বাসবরাজ নামের ওই চালক। তেল ভরার জন্য তরুণীর কাছে দাবি করে ৫০০ টাকা। তরুণী তাকে টাকা দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির ও নম্বর প্লেটের ছবি তোলেন। বিষয়টি লক্ষ্য করে বাসবরাজ। তরুণীকে ভয় দেখিয়ে ছবি মুছতে বলে। তুমুল তরজার পরে বিমানবন্দরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সম্মত হয়। তত ক্ষণে আপৎকালীন ১১২ নম্বরটি ডায়াল করেছেন ওই তরুণী। ২০ মিনিটের মধ্যে বিমানবন্দরে ক্যাবে ওঠার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছয় পুলিশ,গ্রেফতার করে ওই চালককে। তরুণীর দাবি, মাথা ঠান্ডা রাখলেও তিনি অসম্ভব সুরক্ষার অভাব বোধ করছিলেন।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে সরব নেটিজেনরা। তাঁদের দাবি, বিমানবন্দরে ও শহরের অন্য এলাকায় এই ধরনের ভুয়ো ক্যাবের একটি চক্র বহুদিন ধরেই চলছে। প্রথমত, অ্যাপে নির্দিষ্ট নম্বর দেখালেও সেই নম্বরের গাড়ি আসে না অনেক ক্ষেত্রেই। এখন তার সঙ্গে যোগ হয়েছে মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে বেশি টাকা চাওয়া, ভয় দেখানো। বেছে বেছে মেয়েদেরকেই নিশানা করা হয়, এমন দাবিওকরেছেন অনেকে।