পথচারী সেজে পুলিশকে ফোন মহিলা পুলিশ সুপারের। ছবি: টুইটার।
গোলাপি রঙের শালোয়ার পরা। মাথায় ওড়না জড়ানো। মুখে মাস্ক, চোখে রোদচশমা। ফাঁকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ১১২ নম্বরে ফোন করলেন মহিলা। ও পাশ থেকে ফোন ধরতেই কাঁপা কাঁপা গলায় মহিলা বললেন, “হ্যালো, স্যর আমি সরিতা চৌহান বলছি। রাস্তা দিয়ে মোটরবাইকে যাচ্ছিলাম। দু’জন সশস্ত্র ডাকাত আমাদের পথ আটকে সর্বস্ব লুট করে নিয়েছে। আপনারা কিছু একটা করুন।”
‘অসহায়’ মহিলার ফোন পেয়েই কন্ট্রোল রুম থেকে পাল্টা জবাব এল, “আপনি কোথায় আছেন? পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আমাদের টিম যাচ্ছে। একটু অপেক্ষা করুন।” ফোনটা কেটে যাওয়ার ঠিক পাঁচ মিনিটের মধ্যেই পুলিশের টহলদারি ভ্যানের সাইরেনের আওয়াজ পেলেন মহিলা। সেটি মহিলার সামনে এসে থামল। কয়েক জন পুলিশকর্মী এবং এক জন আধিকারিক মহিলার কাছে এগিয়ে এসে গোটা ঘটনা শোনেন। তার পর অভিযোগ লিখে নেন। মহিলাকে আশ্বস্ত করেন, খুব শীঘ্রই ডাকাতদের ধরা হবে।
পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন মহিলা। তা হলে, পুলিশ অপরাধদমনে ঠিকমতো কাজ করছে। আসলে, ওই মহিলা আর কেউ নন, তিনি অরাইয়া জেলার পুলিশ সুপার চারু নিগম। তাঁর সহকর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছেন কি না, অপরাধদমনে কতটা দ্রুত পদক্ষেপ করছেন, তা খতিয়ে দেখতে হাইওয়েতে একটা ‘নাটক’ তৈরি করেছিলেন। নিজে পথচারী সেজে ভুয়ো ডাকাতির গল্প ফেঁদে পুলিশের ১১২ জরুরি নম্বরে ফোন করেছিলেন। কিন্তু যে ভাবে পুলিশ পদক্ষেপ করেছে, তা দেখে পুলিশ সুপার আশ্বস্ত হয়েছেন।
অন্য দিকে, ঘটনার তদন্তে আসা পুলিশকর্মীরা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি যে, সামনে দাঁড়িয়েই তাঁদের কাজের উপর নজরদারি চালাচ্ছেন বস। বেশ কিছু ক্ষণ এই ‘নাটক’ চলার পর পুলিশ সুপার নিজেই যখন সহকর্মীদের কাছে পরিচয় দিলেন, হতচকিত হয়ে গিয়েছিলেন তদন্তে আসা পুলিশকর্মীরা। শেষমেশ হেসেও ফেলেন তাঁরা। তবে এসপি ওই পুলিশকর্মীদের তৎপরতার প্রশংসা করেছেন।