এই ছবি এখন ভাইরাল।
হতে পারেন তিনি পঞ্চায়েত প্রধান। কিন্তু তিনি দলিত। তথাকথিত ‘নিচু জাত’। তাই সরকারি বৈঠকে চেয়ার পাননি। মাটিতে বসেই বৈঠকে অংশ নিতে হয়েছে মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানকে। বাকিরা ‘উঁচু’ জাতের হওয়ায় বসেন চেয়ারে। তামিলনাড়ুর এই ছবি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। আর তা নিয়ে নানা মহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কাড্ডালোর জেলার থেরকু থিট্টাই গ্রামের পঞ্চায়েতের সভানেত্রী ওই মহিলা। তিনি তফশিলি তালিকাভুক্ত আদি দ্রাবিড় সম্প্রদায়ের। গত বছর তিনি একটি সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত হন। সরকারি বৈঠকে মাটিতে বসানোই শুধু নয়, অতীতে আরও অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তিনি। মহিলা জানিয়েছেন, তিনি তথাকথিত নিচু জাতের হওয়ায় পঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি তাঁকে বৈঠকে সভাপতিত্বও করতে দেননি। এমনকি পতাকা তোলার অনুমতিও পাননি তিনি। তাঁর বদলে পতাকা তোলেন সহ-সভাপতির বাবা।
এই ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। দলিত হওয়ার কারণে প্রধানকে মাটিতে বসতে বাধ্য করার ঘটনায় ইতিমধ্যেই কাড্ডালোরের জেলাশাসক চন্দ্রশেখর শাখামুরি ওই পঞ্চায়েতের সচিবকে সাসপেন্ড করেছেন। গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন। চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতে এই ধরণের বৈষম্য ঘটলেও তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানানোর জন্যই সচিবকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ওই পঞ্চায়েতের সব-সভাপতিকে তফসিলি জাতি ও জনজাতির উপর অত্যাচার প্রতিরোধ আইনে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, তামিলনাড়ুতে এখনও জাতপাতের বৈষম্য মারাত্মক। অস্পৃশ্যতার নানা নজির দেখা যায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। এমনকি অনেক এলাকায় 'নিচু জাত’-এর মানুষদের শ্মশান ব্যবহারের অধিকার দেওয়া হয় না। কোথাও কোথাও গ্রামের মধ্যেই দলিতদের থাকার জন্য আলাদা জায়গা চিহ্নিত থাকে। উচ্চবর্ণের বাড়ির সামনে দিয়ে জুতো পায়ে হাঁটার অধিকার নেই 'নিচু জাত’-এর মানুষদের। কিছুদিন আগে পর্যন্তও বহু এলাকায় তফশিলি জাতি, জনজাতির মানুষেরা নির্বাচনে দাঁড়াতে ভয় পেতেন। এখন সেই সমস্যা কমলেও দলিত জনপ্রতিনিধিদের সম্মান যে অনেক জায়গায় অধরা থেকে গিয়েছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল পঞ্চায়েত প্রধানকে মাটিতে বসানোর ছবি।