—প্রতীকী চিত্র।
সিনেমা-সিরিয়ালের গল্পকেও হার মানাবে এই কাহিনি। স্বামীর সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য চলছিল। তাই তাঁকে ফাঁসাবেন বলে অভিনব গল্প ফেঁদেছিলেন, যার বলি হয়েছিল তাঁদের নাবালিকা কন্যা। আদালতে মামলা ঠুকে মহিলা জানিয়েছিলেন, তাঁর কন্যা অন্তঃসত্ত্বা, যার জন্য দায়ী তাঁরই স্বামী অর্থাৎ কন্যার বাবা। কিন্তু বিচার শেষে জানা গেল, সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। এমনকি, তাঁর অভিযোগের সপক্ষে যে যে প্রমাণ তিনি পেশ করেছিলেন, সে সবও ভুয়ো।
ঘটনাটি চেন্নাইয়ের। ছ’বছর আগে ওই মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে তাঁদের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, বাবার নিরন্তর নিগ্রহের কারণেই গর্ভবতী হয়ে পড়েছে নাবালিকা। এমনকি, অভিযোগের প্রমাণ হিসাবে মেয়ের প্রস্রাব পরীক্ষার রিপোর্ট এবং আরও বেশ কয়েকটি পরীক্ষার রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছিলেন মহিলা।
স্ত্রীর সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে আগাম জামিন চেয়ে এবং মামলা খারিজের আর্জি জানিয়ে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত স্বামী। সেই মামলার শুনানি চলে ছ’বছর ধরে। সেখানেই মহিলার দেওয়া প্রমাণগুলি ফের মিলিয়ে দেখা হয়।
তাতেই জানা যায়, প্রস্রাব পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে শুরু করে অন্য প্রমাণ এবং বাকি সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। যে গবেষণাগার থেকে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন তিনি, এক সময় তিনি নিজেই সেখানে ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কাজ করতেন। তারই সুযোগ নিয়ে জাল রিপোর্ট তৈরি করেন মহিলা। এমনকি, চিকিৎসকদের মিথ্যা বয়ান দিতেও বাধ্য করেন।
এরপরেই অভিযোগকারিণীর মেয়ের বয়ান রেকর্ড করে আদালত। তাতেই নিশ্চিত হওয়া যায়, মহিলার আনা সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। আরও জানা যায়, সেই সময় পারিবারিক আদালতে স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। স্বামীকে ফাঁসাতেই তিনি এমন কাজ করেন।
সে কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই আদালত মহিলাকে পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করেছে। মঙ্গলবার এই মামলায় রায় ঘোষণা করে আদালত। তাতে অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগকারিণীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড সাজা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ছ’হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাঁকে।