প্রতীকী ছবি।
প্রাক্তন প্রেমিককে হোটেলে ডেকে নতুন প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল এক তরুণীর বিরুদ্ধে। অসমের একটি হোটেলে উঠেছিলেন তিন জন। এই ঘটনার পর হোটেল ছেড়ে কলকাতা উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগেই বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হন ওই তরুণী এবং তাঁর বর্তমান প্রেমিক।
সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গুয়াহাটির একটি হোটেলে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা হলেন অঞ্জলি সাউ এবং তাঁর বর্তমান প্রেমিক রাকেশ সাউ। অঞ্জলি কলকাতা বিমানবন্দরের একটি রেস্তরাঁয় কাজ করতেন। সেই সময় সন্দীপ সুরেশ কাম্বলি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। কাম্বলি পুণের এক জন গাড়ি ব্যবসায়ী। তাঁকেই খুনের অভিযোগ উঠেছে অঞ্জলির বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছর কাম্বলির সঙ্গে অঞ্জলির বন্ধুত্ব হয়। তার পর সেই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। অঞ্জলির সঙ্গে কাম্বলির সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে আবির্ভাব হয় রাকেশের। বিষয়টি নিয়ে একটা টানাপড়েন শুরু হয় দু’জনের মধ্যে। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে বিয়ে করার জন্য অঞ্জলিকে চাপ দিচ্ছিলেন রাকেশ। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অঞ্জলি তাঁদের জানিয়েছেন, কাম্বলির ফোনে তাঁর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছিল। সেই ছবি সরানোর জন্য রাকেশ এবং তিনি একটি পরিকল্পনা করেন। কলকাতা বিমানবন্দরে কাম্বলিকে দেখা করতে বলেছিলেন অঞ্জলি। কিন্তু তিনি রাজি হননি। বরং কলকাতায় না এসে গুয়াহাটিতে অঞ্জলির সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেন। গুয়াহাটিতে বিমানবন্দরের কাছাকাছি একটি হোটেলের ঘরও বুক করেন কাম্বলি।
পুলিশ জানতে পেরেছে, অঞ্জলি এবং রাকেশ পরিকল্পনা মাফিক গুয়াহাটিতে যান। রাকেশ আগে থেকেই গুয়াহাটির ওই হোটেলে আলাদা ভাবে ঘর বুক করে রেখেছিলেন। গুয়াহাটি পৌঁছে আলাদা হয়ে যান অঞ্জলি এবং রাকেশ। অঞ্জলি কাম্বলির সঙ্গে দেখা করেন। তার পর তাঁরা দু’জনে মিলে হোটেলে যান। ইতিমধ্যে রাকেশও হোটেলে আসেন। কাম্বলি জানতেন না যে অঞ্জলির সঙ্গে রাকেশও এসেছেন। ফলে রাকেশকে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কাম্বলি। তাঁর বুক করা ঘরেই রাকেশের সঙ্গে কাম্বলির হাতাহাতি হয়। সেই ঘটনায় গুরুতর জখম হন কাম্বলি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কাম্বলির মোবাইল ফোন দু’টি নিয়ে রাকেশ এবং অঞ্জলি হোটেল ছেড়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষ কাম্বলির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন। আর তার পরই গোটা ঘটনা জানিয়ে পুলিশে খবর দেন। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অঞ্জলি এবং রাকেশকে চিহ্নিত করে পুলিশ। রাত ৯টা ১৫ মিনিট নাগাদ বিমান ছিল। কিন্তু তার আগেই গুয়াহাটি বিমানবন্দর থেকে অঞ্জলি এবং রাকেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ।