উত্তরপ্রদেশে মানুষখেকো নেকড়ের হানা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের বহরাইচ তটস্থ। কিছুতেই ধরা যাচ্ছে না মানুষখেকো নেকড়েদের। এখনও দু’টি নেকড়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে খবর। রবিবার রাতে তাদের হানায় দু’বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আরও তিন জন গুরুতর জখম হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ছে নেকড়ে। আতঙ্কে ঘুম উড়েছে এলাকাবাসীর।
বহরাইচে রাতভর পাহারা দিচ্ছে বন দফতর। নেকড়ে ধরার জন্য ওত পেতে বসে আছেন কর্মীরা। কিন্তু লাভ হচ্ছে না। রবিবার রাতে নেকড়ের হানায় যে শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তার নাম অঞ্জলি। এ ছাড়া, কমলা দেবী এবং অঞ্চল নামের দু’জন নেকড়ের হানায় জখম হয়েছেন। আহতদের তালিকায় রয়েছে পরশ নামে সাত বছরের এক শিশুও। তিন জনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল থেকে কমলা দেবী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমি রাতে বাড়িতেই ছিলাম। শৌচাগারে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বেরোনোর পর পিছন থেকে নেকড়ে আমাকে আক্রমণ করে। আমার ঘাড়ে এবং কানে আঁচড়ে দেয়। আমি প্রচণ্ড চিৎকার করেছিলাম। তার পর নেকড়েটি পালিয়ে যায়।’’ আক্রান্ত মহিলার পুত্র জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ির একটি দরজা ভাল করে বন্ধ করা ছিল না। সেই দরজা ঠেলেই বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়েছিল নেকড়েটি।
এ প্রসঙ্গে বহরাইচের জেলাশাসক মনিকা রানি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যে চারটি নেকড়েকে ধরেছি। দু’টিকে এখনও ধরা যায়নি। আমাদের দল এলাকায় অনবরত টহল দিচ্ছে। নেকড়ে দু’টিকে যত দ্রুত সম্ভব ধরে ফেলার জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছি।’’
বহরাইচের অন্তত ৩৫টি গ্রাম এই মুহূর্তে নেকড়ে-আতঙ্কে কাঁটা হয়ে আছে। গত দেড় মাস ধরে উত্তরপ্রদেশের এই জেলায় নেকড়ের হানা চলছে। রবিবারের আগে পর্যন্ত নেকড়ের হানায় মৃতের সংখ্যা ছিল আট। রবিবারের হানার পর সংখ্যা আরও বাড়ল।
পর পর হামলার পর উত্তরপ্রদেশের বন দফতর মানুষখেকো নেকড়ে ধরতে ‘অপারেশন ভেড়িয়া’ অভিযান চালু করে। প্রথম দিকে এই সমস্ত হামলার নেপথ্যে কতগুলি নেকড়ে রয়েছে, তা স্পষ্ট ছিল না। সাধারণ মানুষের বর্ণনার উপর নির্ভর করে অভিযান শুরু করেছিল বন দফতর। ধীরে ধীরে জানা যায়, ছ’টি নেকড়ের দল বহরাইচে তাণ্ডব চালাচ্ছে। নানা কৌশলে ফাঁদ পেতে চারটি নেকড়ে ধরা হয়। বাকি দু’টিকে খুঁজতে ড্রোনের ব্যবহারও করা হচ্ছে।