গত বছর এই কুচকাওয়াজে রাজ্যের ট্যাবলো স্থান পায়নি। প্রতীকী ছবি।
দু’বছর পরে ফের দিল্লির কর্তব্যপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নামতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো। শোনা যাবে চণ্ডীপাঠ, ঢাকের বাদ্যি।
‘দুর্গা ও নারীশক্তির ক্ষমতায়ন’কে থিম করে এ বার পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিতে চলেছে। কলকাতার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো ‘আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’-এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোয় সেই দুর্গাপুজোর সঙ্গে নারীর ক্ষমতায়ন তুলে ধরতে দুর্গাপ্রতিমার সঙ্গে মহিলা ঢাকিরা থাকবেন। ঢাকের বাজনার সঙ্গে শোনা যাবে চণ্ডীপাঠ। তাতেও নারীশক্তির আবাহনই ফুটে উঠবে। কলকাতার দুর্গাপুজো যে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে, তা-ও জানানো হবে।
গত বছর এই কুচকাওয়াজে রাজ্যের ট্যাবলো স্থান পায়নি। সে বার প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব এবং সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীকে থিম করে দিল্লিতে ট্যাবলো পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি তা খারিজ করে দেয়। তা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘাতও বেঁধেছিল। ২০২১ সালে অবশ্য বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পকে থিম করে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো দিল্লির কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিল। আবার তার আগের বছর, ২০২০-তে সিএএ-এনআরসি নিয়ে সংঘাতের আবহে ‘কন্যাশ্রী’, ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পকে থিম করে পশ্চিমবঙ্গ ট্যাবলো পাঠাতে চাইলেও কেন্দ্রের ছাড়পত্র মেলেনি।
রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, কেন্দ্রীয় সরকার অতীতে রাজ্যের ট্যাবলো খারিজ করে দিয়ে দাবি করেছে, এর পিছনে কোনও রাজনীতি নেই। কিন্তু এ বার ইউনেস্কোর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দুর্গাপুজোর ট্যাবলো বাতিল হলে রাজনৈতিক অস্বস্তিতে পড়তে হত। কারণ বিজেপিই অতীতে প্রচার চালিয়েছে যে, তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় বাংলায় দুর্গাপুজো বন্ধ হয়েছে। দলের তরফে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছে বিজেপি। দুর্গাপুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের যোগদান আছে বলেও দাবি করেছে। তার পরে রাজ্যের দুর্গার ট্যাবলো বাদ গেলে তৃণমূলই হাতিয়ার পেয়ে যেত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।