মানিকে আর কাজ হচ্ছে না! এ বার হীরা চাই!
ত্রিপুরায় এসে সরকার পরিবর্তনের ডাক দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকেই সরাসরি আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে ২৫ বছরের বাম জমানায় উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার দোষারোপ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির আড়ালে কুকর্মের অভিযোগ— বাদ গেল না কিছুই! রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে জোড়া সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান, ‘চলো পাল্টাই’!
আগরতলা পৌঁছে আজ প্রথমে সোনামুড়া এবং পরে কৈলাশহরে বিজেপি-আইপিএফটি জোটপ্রার্থীদের সমর্থনে সমাবেশ করেছেন মোদী। উত্তর-পূর্বের এই বাম রাজ্যে বিজেপি-র সভায় ভিড়ের বহর যে তাঁকে তৃপ্ত করেছে, পরে টুইট-বার্তায় তা বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার গাড়ি না পেয়ে শান্তিরবাজারে সিটু ও সিপিআইয়ের কার্যালয়ে বিজেপি সমর্থকদের ভাঙুচর চালানোর অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি।
সোনামুড়ার সভায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে মোদীর কটাক্ষ, ‘‘মানুষের সময় খারাপ হলে হাতের আঙুলে পাথর লাগায়। কিন্তু এখানকার মানুষ ভুল পাথর মানিককে লাগিয়ে ২৫ বছর ধরে ঘুরছেন! ভুল পাথর লাগালে ভাগ্য বা সময় ফেরে না। মানিককে দিয়েও কিছু হবে না!’’ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান, ‘‘মানিক থেকে মুক্তি নিন। এ বার হীরা নিতে হবে!’’ ইংরেজি অক্ষর ধরে ধরে ‘হীরা’র অর্থ বুঝিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে: এইচ মানে হাইওয়ে, আই মানে ইন্টারনেট, আর মানে রেলওয়ে এবং এ মানে এয়ারওয়ে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের কটাক্ষ, গুজরাতে যে হীরা শ্রমিকদের কাজ বিপন্ন, তাঁদের কথাই নিশ্চয়ই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী!
মানিকবাবুকে বিঁধতে শুধু এখানেই থামেননি মোদী। আরও বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে এক জন জাদুকরের কথা জানি, পি সি সরকার। মায়াজালে আবিষ্ট করতে জানেন। এখানকার সরকারও তা-ই করছে! দেশের মানুষ শুধু সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখেন। সাদা পাঞ্জাবির আড়ালে কালো কাজকর্মের কথা তাঁরা জানেন না!’’ ইভিএমের সামনে গিয়ে ত্রিপুরার মানুষ তাঁদের অন্তরাত্মা থেকে ‘চলো পাল্টাই’ মন্ত্র শুনবেন বলেও মন্তব্য করেছেন মোদী। সেই সঙ্গেই তাঁর ঘোষণা, ‘‘চিট ফান্ডের মাধ্যমে যাঁরা টাকা লুঠ করেছেন, তাঁদের কড়া শাস্তি হবে।’’ যা শুনে বিজনবাবুর প্রশ্ন, ‘‘ওঁদের দলের তরফে যিনি ত্রিপুরায় ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত (হিমন্তবিশ্ব শর্মা), তাঁর নামই তো চিট ফান্ড-কাণ্ডে জড়িয়েছে। নিজের ঘর থেকেই কি কাজ আগে শুরু করবেন?’’