শিমলায় ধস নামার পর উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: পিটিআই।
বৃষ্টির জেরে হড়পা বান আর ধসের তাণ্ডব চলছে গোটা হিমাচল প্রদেশ জুড়ে। রাজধানী শিমলায় গত কয়েক দিনে মুহুর্মুহু ধস নেমেছে একাধিক জায়গায়। সেই ধসে চাপা পড়ে কেউ নিখোঁজ, কারও দেহ উদ্ধার হয়েছে। কেউ পরিজনদের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে শিউরে ওঠা ছবি ভেসে উঠেছে শিমলা-সহ হিমাচলের বেশির ভাগ অংশে।
তেমনই একটি পাহাড়ি এলাকা কৃষ্ণনগর। সেখানকারই এক বাসিন্দা এবং তাঁর কন্যার একটি কথোপকথন সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সারা দেশ যখন ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনে ব্যস্ত, তখন হিমাচল যুঝছে ধস আর হড়পা বানের সঙ্গে। শিমলার কৃষ্ণনগরেও সে দিন পাহাড় থেকে ধস নেমে একের পর এক বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি থেকে ঠিক ১০০ মিটার দূরে বিশাল গর্জন করে নেমে এসেছিল বিপর্যয়। আর মুহূর্তেই চিৎকার, আর্তনাদ আর কান্নার রোল উঠল। তাঁর কথায়, “ওই দৃশ্য আর আর্তনাদে শিউরে উঠেছিল আমার ছ’বছরের মেয়েটি। জড়িয়ে ধরে আমাকে প্রশ্ন করেছিল, বাবা আমরাও কি চাপা পড়ে মারা যাব? আমাদের বাড়িও কি ধসে চাপা পড়ে যাবে?”
মেয়ের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কেঁপে উঠেছিলেন ওই ব্যক্তি। দু’দিন আগে তারই স্কুলের নার্সারি এবং দ্বিতীয় শ্রেণির দুই পড়ুয়া ধসে চাপা পড়ে মারা গিয়েছে। সামার হিল এলাকার শিবমন্দিরের সেই ঘটনা শিশুমনকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই বাবাকে মেয়ে সটান প্রশ্ন করে বসে, এ বার কি তারাও চাপা পড়বে ধসের নীচে? কৃষ্ণনগরে ধসে চাপা পড়ে প্রাণহানি কম হলেও দৃশ্য ছিল ভয়ানক। যে জায়গায় ধস নেমেছিল, তার ১০০ মিটার দূরে থাকা বাড়িগুলিতে ফাটল ধরে গিয়েছে। আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছিলেন বাসিন্দারা। ওই ব্যক্তি জানান, যেখানে ধস নেমেছিল, সেই জায়গায় ছুটে যেতেই আতঙ্কে শিউরে উঠেছিলেন। কেউ ধসের মধ্যে প্রিয়জনকে খুঁজছেন, কেউ খুঁজে না পেয়ে চিৎকার করে কাঁদছেন। কেউ দিশাহারা হয়ে ছোটাছুটি করছেন। ওই ব্যক্তির কথায়, “তার মধ্যেই কানে ভেসে এল, ওই তো হাত দেখা যাচ্ছে! সঙ্গে সঙ্গে সে দিকে ছুটলেন উদ্ধারকারীরা।”
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে হিমাচলে ইতিমধ্যেই ৮০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আগামী চার দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন।