ফাইল চিত্র।
আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে স্বাস্থ্য কর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের সতর্কতামূলক (বুস্টার) ডোজ় দেওয়ার অভিযান। তাতে মিশ্র প্রতিষেধক দেওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিলেন না স্বাস্থ্য-কর্তারা।
বিশ্বের অনেক দেশই মিশ্র প্রতিষেধক কতটা কার্যকর, তা খতিয়ে দেখতে গবেষণা করেছে। অধিকাংশের ফলই আশাব্যঞ্জক। দেখা গিয়েছে দু’টি ভিন্ন প্ল্যাটফর্মের প্রতিষেধক ব্যবহারে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা এক জাতীয় প্রতিষেধক দেওয়ার ফলে উৎপন্ন অ্যান্টিবডি থেকে বেশি শক্তিশালী। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভিন্ন টিকাপ্রাপ্তদের শরীরে সেই অর্থে কোনও নেতিবচক প্রভাব দেখা যায়নি। ভারতে এ নিয়ে গবেষণা হলেও চূড়ান্ত ফলাফল এখনও প্রকাশ করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
আজ সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে আগামী দিনে বুস্টার ডোজ়ের ক্ষেত্রে মিশ্র প্রতিষেধক ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে কি না, সে প্রশ্নের উত্তরে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) সংস্থার প্রধান বলরাম ভার্গব বলেন, ‘‘মিশ্র প্রতিষেধকের ব্যবহারে শরীরে কী ধরনের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয় তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। বিশ্বের অনেক দেশই এ নিয়ে কাজ করছে। আগামী ১০ জানুয়ারির আগে সরকার জানিয়ে দেবে মিশ্র প্রতিষেধক ব্যবহার করা হবে কি না।’’
সরকারের একটি সূত্রের মতে, যেহেতু মিশ্র প্রতিষেধকে শরীরে অনেক বেশি শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, সে কারণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম ওমিক্রন প্রজাতির বিরুদ্ধে মিশ্র প্রতিষেধক ব্যবহার করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।
আজ ভার্গব জানান, বিশ্বের নানা দেশ-সহ ভারতেও গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত হলে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা সুস্থ হওয়ার পরে কম করে নয় মাস সক্রিয় থাকে। আজ ভার্গব বলেন, আমেরিকার একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে করোনা আক্রান্তদের শরীরে ১৩ মাস অ্যান্টিবডি সক্রিয় থাকে। অন্য দিকে ইংল্যান্ড, ডেনমার্ক ও ইজরায়েলে হওয়া গবেষণায় দেখা গিয়েছে অ্যান্টিবডি ১০ মাস সক্রিয় রয়েছে। তেমনই প্রতিষেধকের ফলে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা ছয় থেকে দশ মাস পর্যন্ত শরীরে থাকে। কলকাতায় সিএসআইআর-আইআইসিবি-র যৌথ উদ্যোগে হওয়া গবেষণায় দেখা গিয়েছে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের ফলে উৎপন্ন হওয়া অ্যান্টিবডি অন্তত দশ মাস সক্রিয় থাকে। যা যথেষ্ট আশার বিষয়।