সংসদেই টক্কর, সর্বদলের ফাঁকে মোদীকে বলে রাখলেন অধীর-সুদীপরা

ভোজের আসরে স্পিকার, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য ব্রাজিল থেকে ফেরা মোদীর বিদেশ সফর নিয়ে কথা পাড়লেন অধীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪০
Share:

সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অন্যান্য দলের সাংসদরা। ছবি: পিটিআই

স্পিকারের ডাকা সর্বদল বৈঠকের প্রায় শেষ লগ্নে এসে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব দলের সাংসদদের নিয়ে সোজা চলে গেলেন ভোজের আসরে। জুড়লেন খোশগল্পও। কিন্তু বৈঠকে বিরোধীরা বুঝিয়ে দিলেন, সোমবার থেকে শুরু হওয়া সংসদের অধিবেশনে ছেড়ে কথা বলবেন না তাঁরা।

Advertisement

ভোজের আসরে স্পিকার, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য ব্রাজিল থেকে ফেরা মোদীর বিদেশ সফর নিয়ে কথা পাড়লেন অধীর। তার পর সুদীপ বললেন, ‘‘এত বিদেশ সফর করছেন, ট্রাম্পের হাত পাকড়ে থাকছেন, কিন্তু ফিরে এসে তো কিছু জানান না!’’ মিটিমিটি হাসছিলেন মোদী। তার পর বললেন, ‘‘বিদেশ সফরের সব কিছু সর্বসমক্ষে বলা যায় না।’’ সুদীপের আর্জি, ‘‘অন্তত যতটা সম্ভব হয়, সংসদকে জানানো তো উচিত।’’ আড্ডার ছলে অধীর তুললেন পশ্চিমবঙ্গের চট শিল্পকে চাঙ্গা করার কথা। নজর দিতে বললেন মুর্শিদাবাদের উপরেও। প্রধানমন্ত্রীও আশ্বাস দিলেন।

সব দলকে নিয়ে বৈঠক হবে আগামিকালও। বিরোধীরা আগেই স্থির করে ফেলেছে, নানা প্রশ্নে চেপে ধরা হবে সরকারকে। আজ সকালেই রাজ্যের নেতাদের দিল্লিতে জড়ো করে বৈঠক করেন কংগ্রেসের নেতারা। রাহুল গাঁধী না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছিলেন সোমেন মিত্র, আবদুল মান্নান। কংগ্রেস স্থির করেছে, আর্থিক দুর্দশা থেকে কৃষি সঙ্কটের মতো বিষয় নিয়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করতে হবে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে। ৩০ নভেম্বর সব রাজ্যের নেতা-কর্মীরা যোগ দেবেন দিল্লির রামলীলা ময়দানে ‘ভারত বাঁচাও’ জনসভায়। সেখানে থাকবেন সনিয়া এবং রাহুল গাঁধীও।

Advertisement

মহারাষ্ট্রের শিবসেনাকে এখন বিরোধী শিবিরের ‘নতুন’ সদস্য হিসেবেই ধরা হচ্ছে। সর্বদল বৈঠকে আজ তারাও সাফ জানায়, গত অধিবেশন বেরিয়ে গিয়েছে সরকারের বিল পাশ করতে। এ বারে সময় দিতে হবে বাকিদের। সোমবার সংসদের অধিবেশন শুরুর আগেই সকালে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদের উদ্যোগে বিরোধী দলের নেতাদের একটি বৈঠক হবে বলে ঠিক হয়েছে। আজ রাতে সনিয়া গাঁধীর বাড়িতে সংসদের কৌশল রচনার বৈঠকে স্থির হয়, বিচারপতি কে এম জোসেফের মন্তব্যের পরে রাফালে যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) দাবি, গাঁধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা তুলে নেওয়া, মহারাষ্ট্রে পিএমসি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের দুর্দশা, আর্থিক বেহাল দশা, কৃষি সঙ্কট থেকে দিল্লির দূষণ— সব বিষয়েই আক্রমণ করা হবে সরকারকে।

কংগ্রেসের নেতা কে সি বেণুগোপাল বলেন, ‘‘রামলীলার সভায় সামিল হওয়ার জন্য অন্য বিরোধী দলের সঙ্গেও কথা হবে।’’ ইতিমধ্যেই নানা বিষয় নিয়ে সরকারকে চেপে ধরার জন্য বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয়ের কাজটি শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, লোকসভা ভোটের পর এখনও পর্যন্ত বিরোধীরা জোট বেঁধে সরকারকে কাঠগড়ায় তুলতে পারেনি। সংসদের গত অধিবেশনে তিরিশটির বেশি বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে সরকার। ভোট জয়ের রেশে জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদও রদ করিয়ে নিয়েছে। এখনও যদি বিরোধীরা ফোঁস করতে না পারে, তা হলে আর কবে?

রাতে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে নিজের ছবি টুইট করে মোদী বলেন, ‘‘সব দলের সাংসদদের সঙ্গে খুব ভাল আলোচনা হল। জনতা-কেন্দ্রিক ও উন্নয়ন নিয়ে খুব ভাল অধিবেশন হবে আশা করি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement