রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় পেহলু খানকে। —ফাইল চিত্র।
উন্মত্ত জনতার গণপিটুনিতে বাবার খুনের সেই ভিডিয়ো টেলিভিশনে দেখলে এখনও শিউরে ওঠেন পহেলু খানের ছেলে ইরশাদ। প্রতিবারই প্রতিজ্ঞা করেন, যে করে হোক বাবার জন্য সুবিচার আদায় করবেন তিনি। সম্প্রতি অলওয়ারের নিম্ন আদালতের নির্দেশে ছাড় পেয়েছে খুনে অভিযুক্ত ছ’জনই। তবে তাতে হাল ছাড়তে নারাজ ২৮ বছরের যুবক। রাজস্থানের জয়সিংহপুরের বাড়িতে বসে বলেন, ‘‘আমি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। এমনকি, ঘর-বাড়ি বিক্রি করে টাকা জোগাড় করতে হলেও করব। আমি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাব।’’
তিনি জানিয়েছেন, এত দিন আইনি ও সামাজিক ভাবে নানা স্তরের মানুষ পাশে থেকেছেন তাঁদের। আর্থিক সাহায্যও পেয়েছেন লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু পহেলুর স্ত্রী জ়ুবুনার ক্ষোভ, সরকারের তরফে কোনও সাহায্য পাননি তাঁরা। ক্ষতিপূরণের ৫ লক্ষ টাকা এখনও মেলেনি। ইরশাদ বলেছেন, ‘‘এক অভিযুক্তের জামিনের আর্জির বিরুদ্ধে লড়ার জন্য হাইকোর্টের এক আইনজীবীকে ৫৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল। তার জন্য আমাদের একটি মোষ বিক্রি করে দিতে হয়। কিন্তু এ ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।’’
রাজস্থান সরকার আজ জানিয়েছে, পহেলু হত্যা মামলায় বুধবার অলওয়ারের নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখবে তারা। এর জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করছে রাজ্য। বুধবার এই রায় ঘোষণার পরে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত টুইট করে জানান, পেহলুর পরিবারকে সুবিচার দিতে চায় রাজ্য সরকার। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানাবে রাজ্য। তিনি জানিয়েছেন, গণপিটুনির বিরুদ্ধে সম্প্রতি আইন পাশ করেছে রাজস্থান সরকার। এই আইনে অপরাধীদের যাবজ্জীবন এবং ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা হবে। পহেলু হত্যায় ছয় অভিযুক্ত ছাড় পেয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢ়রা। রাজস্থানের কংগ্রেস সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘‘গণপিটুনির বিরুদ্ধে সরকারের নয়া আইন প্রশংসনীয়। আশা করি, পহেলু খানের মামলায় এটি কার্যকর হবে।’’