জিম করবেট জাতীয় উদ্য়ান। ছবি: সংগৃহীত।
বাড়ির অশান্তি থেকে বাঁচতে জঙ্গলে চলে আসেন ওঁরা অনেকেই। সেখানে কাঠকুটো, জঙ্গলের ফলমূল, এটাসেটা কুড়িয়ে সংসার চালানোর রসদ জোগাড় করার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে সুখ-দুঃখের কথা ভাগ করে নেন জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির মহিলারা। দিনশেষে ঘরে ফেরেন। জঙ্গলে থাকার সময়টুকু বন্যপ্রাণীদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে নিজেদের মধ্যে চেঁচিয়ে কথা বলেন। গানও করেন।
জিম করবেট উত্তরাখণ্ডের জঙ্গলগুলির এই সব ঘটনার কথা বহু কাহিনীতেই লিখেছেন। এ বার উত্তরাখণ্ডে তাঁরই নামাঙ্কিত জাতীয় উদ্যানে পশু-পাখিদের উপরে নজরদারির ক্যামেরা ও ড্রোন দিয়ে ওই সব স্থানীয় মহিলাদের উপরে নজরদারির অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হল। সম্প্রতি ‘এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং এফ’ নামক জার্নালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ত্রিশান্ত সিমলাই এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, বন থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করতে যাওয়া স্থানীয় মহিলাদের ভয় দেখাতে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংগ্রহে বাধা দিতে বন দফতরের রেঞ্জারদের একাংশ ড্রোন ওড়ান।
১৪ মাস ধরে ত্রিশান্ত-সহ গবেষক দলটি স্থানীয় অন্তত ২৭০ জন মহিলার সঙ্গে কথা বলেছেন। ত্রিশান্তকে এক মহিলা বলেছেন, “জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে গিয়ে আমরা অনেক সময়ই বুঝতে পারি, আমাদের উপরে কেউ বা কারা সারাক্ষণ নজর রাখছে! আমরা তাই নিজেদের মধ্যে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছি। যখন বলি, তখনও ফিসফিস করে বলি, যাতে অন্য কেউ শুনতে না পায়। বা গান গাই।” ত্রিশান্ত জানিয়েছেন, এর ফলে অনেক সময়েই মহিলারা বন্য জন্তুর মুখোমুখি হন। সম্প্রতি এই ভাবে বাঘের হামলার শিকার এক মহিলার সঙ্গে কথা বলে গবেষণাপত্রে তা জানিয়েছেন ত্রিশান্ত।
বন দফতরের রেঞ্জারদের একাংশের বিরুদ্ধে কয়েক জন মহিলা জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যক্তিগত ভিডিয়ো তুলে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। এতে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন তাঁরা।