প্রমোদ সাহরন ও তাঁর পরিবার। ছবি- সংগৃহীত।
স্বামী আত্মহত্যা করেছেন খবর পেয়েই দুই মেয়েকে নিয়ে জলে ঝাঁপ দিলেন এক মহিলা। ছোট সন্তান ও মহিলার মৃত্যু হলেও বড় মেয়েটি কোনওক্রমে সাঁতার কেটে নিজের জীবন বাঁচাল। এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হল হরিয়ানার রোহতক। একই দিনে মৃত্যু হল পরিবারের তিনজনের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৮ বছরের প্রমোদ সাহরন বুধবার নিজের গাড়িতে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন। এই খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর স্ত্রী মীনাক্ষী (৩৪) দুই সন্তানকে নিয়ে একটি জলের ট্যাঙ্কে ঝাঁপ দেন। তিন জনের মধ্যে একমাত্র ১০ বছরের এনা সাঁতার জানত। সে সাঁতার কেটে কোনও ভাবে জল থেকে উঠে আসে। মা ও চার বছরের বোনকে বাঁচানো সম্ভব নয় বুঝে জল থেকে উঠে এনা বাড়ি চলে যায় ও প্রতিবেশীদের জানায়। এর পরে প্রতিবেশীদের থেকে খবর পায় পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রমোদ সারন রোহতকের একটি নার্সিং কলেজের অধ্যাপক। বুধবার সকালে প্রমোদ এক মহিলা অধ্যাপকের সঙ্গে নিজের গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন গুরুগ্রামে। সেখানে একটি কলেজে পরীক্ষা নিয়ে ফেরার সময়ে সন্ধে নাগাদ প্রথমে মহিলা অধ্যাপককে বাড়ির কাছে নামিয়ে দেন। এর পরে গাড়ি নিয়ে কানহেলি গ্রামের দিকে যান আর ঝাজ্জর-রোহতক রোডে গাড়ি থামিয়ে বিষ খান। এর পরে এক বন্ধুকে সেই খবরও দেন। খবর পেয়েই সেই বন্ধু ঘটনাস্থলে আসেন ও প্রমোদকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে প্রমোদ মারা গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: প্রয়াত এস পি বালসুব্রহ্মণ্যম, সঙ্গীতজগতে শোকের ছায়া
স্থানীয় পুলিশ অফিসার বিজেন্দর সিংহ জানিয়েছেন, আত্মহত্যার আগে একটি সুইসাইড নোট রেখে গিয়েছেন প্রমোদ সারন। কিন্তু তাতে তাঁর মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। ঠিক কী কারণে তিনি এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: ‘নায়িকারা মাদকাশক্ত, নায়কেরা কি ধোয়া তুলসি পাতা?’ দীপিকার মাদকযোগ তদন্তে প্রতিবাদ মিমির
এর পরের ঘটনায় আরও আশ্চর্য হয় পুলিশ। স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরে পরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন পেশায় অধ্যাপিকা স্ত্রী মীনাক্ষীও। সঙ্গে নেন দুই মেয়ে ৪ বছরের প্রিশা ও ১০ বছরের এনাকেও। বড় মেয়ে এনা পুলিশকে এমনও জানিয়েছে যে, তাঁকে মা জলের ট্যাঙ্কে ঠেলে ফেলে দেয়। কোনওক্রমে সাঁতার কেটে সে বেঁচে যায়।
বুধবার রাতেই এনাকে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় তার মা ও বোনের দেহ উদ্ধার করতে কিন্তু সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে ফের গিয়ে দেহ দু’টি উদ্ধার করা হয়েছে। রোহতক পুলিশের ডেপুটি সুপার সজ্জন সিংহ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে যে আত্মঘাতী অধ্যাপক অবসাদে ভুগছিলেন। মাস খানেক আগেই তাঁর এক ভাইয়ের মৃত্যু হয়।