coronavirus

কে বাঁচবে আর কে নয়, দিল্লির হাসপাতালে বেছে নিতে হচ্ছে ইন্টার্ন রোহনকেই

কখনও কখনও প্রয়োজনে টানা ২৭ ঘন্টাও কাজ করতে হয় রোহনকে। সারা দিনের কাজের পর রাতে যখন ঘুমোতে যান, তখনও যেন শুনতে পান মনিটরে হৃদস্পন্দনের শব্দ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২১ ১৫:০৪
Share:

দিল্লির হাসপাতালে কোভিড-যুদ্ধের লড়াইয়ে তরুণ চিকিৎসক রোহন

এখনও পড়াশোনার পাঠ চোকেনি। প্রশিক্ষণ চলছে। কিন্তু দিল্লির এক হাসপাতালে তাঁর নজরদারিতেই চলছে করোনা চিকিৎসা। রোহন আগরওয়াল। দেশের অন্যতম সেরা হাসপাতালগুলির মধ্যে একটি রাজধানীর এই ‘হোলি ফ্যামিলি’ হাসপাতাল। সেখানে এখন কে মরবেন আর কে বাঁচবেন, তা আপাত ভাবে ২৬ বছরের রোহনকেই বেছে নিতে হচ্ছে। অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা কোনও রোগীকে সামনে পড়ে থাকতে দেখেও অনেক সময় তাঁর কিছু করার থাকছে না। হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন কিছুই নেই। রোহন বলছেন, ‘‘কাকে বাঁচানো যাবে আর কাকে যাবে না, তা ঈশ্বর ঠিক করে দেন।’’

Advertisement

গোটা হাসপাতাল চত্বর জুড়েই করোনা আক্রান্তদের পরিবারের ভিড়। অধিকাংশের মুখে কাপড়ের মাস্ক। ওই হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে রোগী ও তাঁদের পরিবার প্রত্যেকেই জানেন হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা নেই। অক্সিজেন, ভেন্টিলেটরের অভাব। ওই হাসপাতালের যে ঘরে বর্জ্য ফেলা হয়, সেখানেও এক রোগী মাটিতে শুয়ে অক্সিজেনের অভাবে কাতরাচ্ছেন এমন ছবিও দেখা গিয়েছে। রোহন নিজেও জানেন না, তিনি কোভিড আক্রান্ত হলে এই হাসপাতালে শয্যা পাবেন কি না। জানুয়ারিতে কোভিড-যোদ্ধাদের টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল দেশ জুড়ে। সেই সময়ে তিনি অসুস্থ থাকায় টিকা নেওয়া হয়ে ওঠেনি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘ভাইরাস চলে গিয়েছে, এই ধারণাই সর্বনাশ ডেকে আনল।’’

Advertisement

কখনও কখনও প্রয়োজনে টানা ২৭ ঘন্টাও কাজ করতে হয় রোহনকে। সারা দিনের কাজের পর রাতে যখন ঘুমোতে যান, তখনও যেন শুনতে পান মনিটরে হৃদস্পন্দনের শব্দ। তাঁর দেখভালে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ভুলতে পারেন না তিনি। চেষ্টায় কোনও খামতি ছিল না। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসার সরঞ্জাম নেই হাসপাতালে। কোন রোগীর আগে চিকিৎসা করবেন, তা নিয়ে সর্ব ক্ষণ তাঁর ভিতরে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। জানান, ‘‘কোনও রোগীর হয়তো জ্বর হয়েছে। আমি জানি তিনি অসুস্থ। কিন্তু তাঁর অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই বলে তাঁকে ভর্তি করতে পারি না। করোনায় আক্রান্ত একজন বৃদ্ধ এবং একজন যুবকের মধ্যে কাকে ভর্তি নেব, বুঝতে পারি না। দু’জনেরই হয়তো অনেকটা অক্সিজেন প্রয়োজন, কিন্তু শয্যা একটাই।’’ হাসপাতালের পরিবেশ দেখে হতাশাগ্রস্ত তরুণ চিকিৎসক। তাঁর কথায়, ‘‘মাঝে মাঝে ঘণ্টাখানেকের জন্য একটু বেড়িয়ে আসতে ইচ্ছে করে। কারণ আমি জানি, আমায় এখনও টানা ২৪ ঘণ্টা ওই হাসপাতালেই থাকতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement