টিকার সার্টিফিকেটে মোদীর ছবি কেন? ফাইল চিত্র।
কোভিড-প্রতিষেধকের শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সরানোর দাবিতে মামলা করেছেন এক প্রবীণ। তাতে মঙ্গলবার কেরল সরকার ও কেন্দ্রের মতামত জানতে চাইল হাই কোর্ট।
পিটার ময়ালিপারম্পিল নামে ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, তাঁর কোভিড প্রতিষেধকের শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। বিচারপতি এন নাগারেশ আর্জিকে মান্যতা দিয়ে এই ব্যাপারে কেন্দ্র ও কেরল সরকারের অবস্থান জানতে চেয়ে নোটিস দিয়েছেন। বলা হয়েছে, পরবর্তী শুনানির আগে তা হলফনামার আকারে জমা করতে।
আবেদনকারী জানান, তিনি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ নিয়েছেন। তার জন্য দাম দিতে হয়েছে। তাই, তাঁর শংসাপত্র ব্যক্তিগত তথ্যযুক্ত ‘নিজস্ব পরিসর’। সেখানে অনুপ্রবেশ মানে ব্যক্তি-পরিসর উল্লঙ্ঘন করা। আবেদনপত্রে আমেরিকা, ইজরায়েল, জার্মানি-সহ বিভিন্ন দেশের কোভিড টিকার শংসাপত্রের ছবি যুক্ত করেছেন পিটার। জানান, সেখানকার শংসাপত্রে কোনও রাষ্ট্রনেতার ছবি নেই। ওই তথ্যের-অধিকার কর্মীর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছাড়া শংসাপত্র চেয়ে সাড়া মেলেনি।
২০১৫ সালে সর্বোচ্চ আদালত একটি নির্দেশে জানিয়েছিল, সরকারি খরচে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে কোনও নেতা-মন্ত্রীর ছবি দেওয়া চলবে না। কেন্দ্র এবং বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে তা পুনর্বিবেচনা করা হয়। ২০১৬ সালে শীর্ষ আদালত জানায়, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের ছবি বিজ্ঞাপনে দেওয়া যাবে।
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের আগে কিছু সরকারি বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি কোভিড-টিকার শংসাপত্রে নরেন্দ্র মোদীর ছবি থাকা নিয়েও নির্বাচন কমিশনে নালিশ করে তৃণমূল। কমিশন নতুন করে নির্দেশ দেয়, নির্বাচনী বিধির কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অসম, কেরল এবং পুদুচেরিতে মোদীর ছবি দেওয়া করোনা টিকার শংসাপত্র দেওয়া যাবে না। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, টিকা নেওয়ার পরেও সবাই যাতে কোভিড-বিধি অনুসরণ করেন, সেই বার্তা দিতেই প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেওয়া কোভিড-টিকার শংসাপত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও বার্তা থাকবে বলে জানানো হয়। শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর বদলে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে ছত্তীসগঢ় ও ঝাড়খণ্ডেও। তা কেরালা হাই কোর্টের মামলা ঘিরে আবাব ফিরে এল জাতীয় রাজনীতিতে।