ভোট চলাকালীন উত্তরপ্রদেশ থেকে এমন বহু দৃশ্য সামনে এসেছে। ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশে ব্লক পঞ্চায়েত স্তরের ভোটে হিংসার অভিযোগ নিয়ে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে প্রশ্ন তুলতে চলেছে তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। তাদের প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী হিংসার বিষয়ে যেখানে বিজেপি এত সরব, যোগী-রাজ্যে ‘ভোট-সন্ত্রাস’ নিয়ে মোদী সরকার নীরব কেন?
উত্তরপ্রদেশে ৮২৫টি ব্লক পঞ্চায়েত প্রধানের আসনের মধ্যে ৬৩৫টিই জিতেছে বিজেপি। কংগ্রেস, তৃণমূলের অভিযোগ, ওই ভোটের সময়ে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ১৮টি জেলায় লাগামছাড়া হিংসার ঘটনা ঘটেছে বিজেপির নেতৃত্বে। তৃণমূলের বক্তব্য, সামান্যতম ছুতোয় পশ্চিমবঙ্গে হিংসার অভিযোগ তুলে তদন্তকারী দল পাঠানো হচ্ছে। বিজেপি নেতাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরছে মানবাধিকার কমিশন। অথচ পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করে উত্তরপ্রদেশে হিংসা ছড়ানো সত্ত্বেও মুখে কুলুপ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, মানবাধিকার কমিশনের। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বিজেপিশাসিত রাজ্যে সাত খুন মাফ।
রবিবার রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “উত্তরপ্রদেশে ১৮টি জেলায় তুমুল হিংসা হয়েছে। সাংবাদিককে মেরে ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে বলতে শোনা গিয়েছে তাঁর উপরে বিজেপি নেতা-কর্মীদের হামলার কথা। কোথাও কর্তব্যরত পুলিশকে কাজে লাগিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা হয়েছে। বিষয়টির তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দল পাঠাল না কেন? মানবাধিকার কমিশন কোথায় গেল?’’
সুখেন্দুদের ক্ষোভ, পশ্চিমবঙ্গে দেড় লক্ষ আধাসামরিক বাহিনী দিয়ে আট দফায় ভোট করানো হল শোচনীয় আইনশৃঙ্খলার দোহাইয়ে। রাজ্যপাল গেলেন কোচবিহার, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে! মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা রাজ্যে ঘুরলেন বিজেপি নেতাকে সঙ্গে নিয়ে! রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতে, “সাংবাদিক, দলিত, মহিলা—উত্তরপ্রদেশে সবাই আক্রান্ত। বাংলায় হারের পরে উত্তরপ্রদেশে পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচনে ধাক্কা খায় বিজেপি। ফলে যে কোনও মূল্যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার তাড়নাতেই হিংসার আশ্রয় নিয়েছে তারা। উত্তরপ্রদেশে তান্ডব চালিয়ে পঞ্চায়েত ভোট জিতেছে আর পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে প্রতিশোধের রাজনীতি করছে।”
যুব কংগ্রেসের প্রধান বি ভি শ্রীনিবাস বলেন, “নরেন্দ্র মোদী কি উত্তরপ্রদেশে হিংসার সময় চোখে ঠুলি পরে ছিলেন?” তাদের আরও প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে হৈ-হল্লা করার পরে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে নির্বিচারে হিংসা চালিয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না কেন? সেখানে রাজ্যপাল কী করছেন? জবাবে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের কত জন নিহত? আমাদের বহু কর্মীর প্রাণ গিয়েছে।” রাজ্যপাল প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “উত্তরপ্রদেশে রাজ্যপাল কী করছেন, তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।”