প্রতীকী চিত্র।
একটা সময় পর্যন্ত দূরপাল্লার ট্রেনের বগির রং হত লালচে। বলা ভাল, পোড়া ইটের রঙে রঙিন হত দূরপাল্লার বগি। কিন্তু এখন বেশির ভাগ দূরপাল্লার ট্রেনের রঙই হয় নীল। মেল, এক্সপ্রেস দুয়ের ক্ষেত্রেই। সাধারণ বগি কিংবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবেতেই জানলার কাছে আকাশির কাছাকাছি হালকা নীল আর বাকি সবটা গাঢ় নীল। তবে রাজধানী এক্সপ্রেসের বগির রং কিন্তু মোটেও নীল নয়। নীলের কাছাকাছিও নয়। পুরোটাই লাল। একই ভাবে আরও কিছু ট্রেনের ক্ষেত্রে নানা রঙের ব্যবহার দেখা যায়। কিন্তু মোটের উপরে বেশির ভাগ দূরপাল্লাই নীল।
নয়ের দশকের গোড়া থেকে ভারতীয় রেলে দূরপাল্লার ট্রেনে নীল বগি ব্যবহার শুরু হয়। আসলে নীল রঙের বগি দেখলেই বোঝা যায় এগুলি ’আইসিএফ’ কোচ। অর্থাৎ এগুলি তৈরি হয়েছে চেন্নাইয়ের ইনটিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে তৈরি। এগুলি ঘণ্টায় ৭০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে চলতে পারে। এই কোচগুলি মূলত লোহার তৈরি এবং ভারী। আর রাজধানী এক্সপ্রেসের লাল বগি মানে সেগুলি ’এলএইচবি’ (লিঙ্কে-হফম্যান বুশ) কোচ। ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে চালানো যায় এই বগিগুলি। সাধারণ বগির তুলনায় অনেকটাই হালকা। প্রথম দিকে জার্মানি থেকে এই বগিগুলি আনা হয়। তবে এখন পঞ্জাবের কাপুরথালায় তৈরি হয়ে এমন বগি।
এখন অবশ্য ভারতে নীল আর লাল ছাড়াও অন্য রঙের ট্রেন দেখা যায়। তবে প্রতিটিই প্রিমিয়াম ট্রেন। আর সব বগিই এলএইচবি। কারণ, এগুলি বেশি গতির ট্রেন। এই ট্রেনগুলিকে আলাদা করে চিহ্নিত করার জন্য রেল আলাদা আলাদা রঙের ব্যবহার করে। যেমন শতাব্দীর ক্ষেত্রে নীল ও ধুসর রং মিলিয়ে রঙিন হয় বগি। আবার তেজস মানে উজ্জ্বল কমলা রং। তার উপরে মেরুন দিয়ে নকশা করা। হামসফর এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রে বগির মূল রং নীল হলেও তা নকশা করা। সেই সঙ্গে থাকে হলুদ ও কমলা রঙের ব্যবহার। দুরন্ত এক্সপ্রেসের বগিতেও থাকে হলুদ ও সবুজ রঙের ব্যবহার। তবে গরীব রথ মানে গাঢ় সবুজ। সঙ্গে জানলার কাছগুলি হলুদ। আবার অন্ত্যোদয় এক্সপ্রেস মানে লাল-হলুদ কিন্তু মহামান্য এক্সপ্রেসের বগির রং বেগুনি। তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডবল ডেকার ট্রেন মানেই তার বগি হবে লাল ও হলুদ রঙের মিশেল।