একের পর এক নিরাপত্তারক্ষীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে শিবপ্রসাদ গন্ডের বিরুদ্ধে। প্রতীকী ছবি।
নিছকই ‘বিখ্যাত’ হওয়ায় ঝোঁকে নিরাপত্তারক্ষীদের খুন করতেন মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার ‘সিরিয়াল কিলার’ শিবপ্রসাদ গন্ড? না কি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে? তিন নিরাপত্তারক্ষীকে হাতুড়ি, পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করার পর শুক্রবারই ধরা পড়েন বছর উনিশের শিবপ্রসাদ। জেরায় পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, গ্যাংস্টার হওয়ার ঝোঁক এবং ধনী হওয়ার নেশায়, তিনি একের পর এক খুন করেছেন।
কিন্তু তাঁর এই দাবির কতটা ভিত্তি এবং বাস্তবতা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য শিবপ্রসাদের বাড়ির লোককেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আর তাঁদের বয়ানেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শিবপ্রসাদের পরিবারের দাবি, আর চার-পাঁচটা সুস্থ, স্বাভাবিক ছেলের মতোই ছিলেন তাঁদের ছেলে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই তাঁর ব্যবহারে অদ্ভুত রকম পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। একদম চুপ, শান্ত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই-ই নয়, পরিবারের সঙ্গে দূরত্বও বাড়াতে শুরু করেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করতেন শিবপ্রসাদ। সেখানে যা বেতন পেতেন, তাঁর কাছে যথেষ্ট ছিল না বলেই মনে করতেন। যা টাকা পেতেন, সঙ্গে সঙ্গে খরচও করে ফেলতেন। অন্য রাজ্যে কাজ করতে পাড়ি দিয়েছিলেন শিবপ্রসাদ। প্রথমে তিনি যান মহারাষ্ট্রের পুণেতে। সেখানে ওয়েটারের কাজ করতেন। তাঁর প্রথম অপরাধের সূত্রপাত এখান থেকেই। হোটেল মালিককে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। তার পর সেই কাজ ছেড়ে চলে আসেন।
শিবপ্রসাদের বাবা এক সংবাদ সংস্থাকে জানান, শুধু মহারাষ্ট্রই নয়, খুব অল্প বয়স থেকে কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন একাধিক রাজ্যে। যখনই বাড়ি ফিরতেন, মায়ের কাছে টাকা চাইতেন। জোরাজুরি করতেন। না দিতে পারলে মাকে বলতেন, “আত্মহত্যা করে মরছ না কেন!”
শিবপ্রসাদের ভাই জানান, গত চার বছর ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলা ছেড়ে দিয়েছিলেন দাদা। তাঁর কথায়, “দাদার আচরণে একটা অস্বাভাবিকত্ব লক্ষ করেছিলাম।” পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় শিবপ্রসাদ স্বীকার করেছেন যে, খুন করার জন্য নেটমাধ্যমে অপরাধমূলক ভিডিয়ো দেখতেন। আর তা থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে অপরাধ জগতে নামেন।
তবে শিবপ্রসাদের পরিবার তাদের ছেলের এই অপরাধকে কোনও ভাবেই সমর্থন করেননি। বরং তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।