সাংবাদিকদের মুখোমুখি জ্যোতির মা আশা দেবী। ফাইল চিত্র।
নির্ভয়া মামলায় তিন অপরাধীর ফাঁসির আদেশই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্য এক অভিযুক্ত আত্মহত্যা করেছে আগেই। আর, সব চেয়ে নৃশংস ভূমিকা যার ছিল, সেই নাবালক তার হোমে থাকার মেয়াদ শেষ করে মুক্ত।
কোথায় আছে সেই ছেলেটি? গত কাল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে নতুন করে ওই তরুণকে নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। সাবালক হয়ে মুক্ত সেই তরুণ এখন কোথায় আছে, কী করছে, কেমন আছে— তাই নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে নানা মহলেই।
সরকারি সূত্রের খবর, ছেলেটি এখন দক্ষিণের একটি রাজ্যে একটি ছোট্ট ধাবায় রান্নার কাজ করছে। অতীত ঝেড়ে ফেলতে নিজের নামও বদলে ফেলেছে সে। ২০১৬-তে দিল্লির নাবালকদের হোম থেকে ছাড়া পাওয়ার পর একটি অসরকারি সংস্থা তার পুনর্বাসনের দায়িত্বে ছিল। সংস্থার কর্ণধার নীনা নায়েক লোকসভা ভোটে দক্ষিণ বেঙ্গালুরু কেন্দ্র থেকে আম আদমি পার্টির টিকিটে লড়েছিলেন। ছেলেটির পুনর্বাসনে দিল্লির কেজরীবাল সরকার অর্থসাহায্যও করেছে। সংস্থার হোমে থাকার সময়েই রান্না, দর্জির কাজ শেখানো হয়েছিল ছেলেটিকে। ওই সংস্থা সূত্রেই খবর, সেই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে এখন রোজগার করছে সে। নতুন জীবনে তার যাতে সমস্যা না হয়, ধাবার মালিকের কাছেও তার পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
তবে ২০১৬-তে হোম থেকে মুক্তির পর ছেলেটির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার কেউ কেউ তার আসল নাম বলে দিচ্ছেন, যা আইনবিরুদ্ধ।
সরকারি সূত্রের খবর, অপরাধী পরিচয় গোপন রাখলেও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তার উপরে নজর রেখেছে। কারণ দু’টি। এক, হোমে থাকার সময়ও ওই বালকের মধ্যে কোনও অনুতাপ লক্ষ করা যায়নি। দুই, হোমে থাকাকালীন দিল্লি হাইকোর্টে বিস্ফোরণে অভিযুক্ত এক কাশ্মীরি নাবালক অপরাধীর সংস্পর্শে আসে সে। ওই সময় তার মগজ ধোলাই করা হয়ে থাকতে পারে বলেও গোয়েন্দাদের সন্দেহ।
জ্যোতির বাবা-মা চেয়েছিলেন, ওই নাবালকের যেন সাবালক হিসেবেই বিচার হয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে আশা দেবী ফের বলেন, যে ধর্ষণ-খুন করতে পারে, সে নাবালক হতে পারে না।