ন্যাশনাল মিউজিয়ম। —ফাইল চিত্র।
এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ কি গুদামবন্দি করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার? দিল্লির ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা’ প্রকল্পের এলাকায় ন্যাশনাল মিউজিয়ম খালি করার সরকারি নির্দেশ প্রকাশিত হওয়ায় দেশ জুড়ে উৎকণ্ঠার পটভূমিতে বিষয়টি খোলসা করার আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব জহর ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কিসান রেড্ডি এবং কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন।
জহরের কথায়, ‘‘মিউজিয়মের অমূল্য সামগ্রী সংরক্ষণের মূল্য বা এ দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, স্থাপত্য নিয়ে ছিটেফোঁটা দয়ামায়া থাকলেও স্থায়ী কোনও জুতসই ঠিকানা ছাড়া কেউ এ কাজ করত না! যাঁরা নিজেদের দেশের সংস্কৃতির ধারকবাহক বলে দাবি করেন তাঁরাই দেখছি আগ্রাসী লুঠেরার মতো দেশের সম্পদ সরানোর রাস্তা খুলে দিচ্ছেন।’’
দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়মে হরপ্পার সময়ের ভাস্কর্য, ব্যবহার্য সামগ্রী পর্যন্ত রয়েছে। জহরের শঙ্কা, অজ্ঞাতকুলশীল বস্তুর মতো তা যেখানে সেখানে রাখা গেলে, পুরাসামগ্রীগুলির ক্ষতি হবে। চোরাকারবারিরা বিদেশে পাচারও করতে পারে! সংস্কৃতিমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জহরের প্রশ্ন, মিউজিয়মের দ্রষ্টব্য বস্তুর ক’টি চিহ্নিত করে ডিজিটাল নথি তৈরি হয়েছে? তা রোদ, জলের হাত থেকে তা সংরক্ষণের প্রক্রিয়াই বা কত দূর? ২০২১এর ডিসেম্বরে রেড্ডি সংসদে জহরের প্রশ্নের জবাবে জানান, ২,০৬,১৬৯টি সামগ্রীর মধ্যে মাত্র
৮০,৯৯৭টি চিহ্নিত করে ডিজিটাল নথি তৈরি হয়েছে।
আবাসন মন্ত্রীর উদ্দেশে জহরের প্রশ্ন, ন্যাশনাল মিউজিয়ম নর্থ বা সাউথ ব্লকে সরানো হলে তা প্রদর্শনের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়া কত দূর এগিয়েছে? সেন্ট্রাল ভিস্টার বেশ কয়েকটি ভবন চলছে আগের মতোই। তা হলে সুদীর্ঘ টিনের পাতে ঢেকে কার্যত গোপনে ন্যাশনাল মিউজিয়ম ঘিরেই কেন কাজের তোড়জোড় শুরু হল? ওই তল্লাটে ভূগর্ভস্থ তল তৈরির সুবিধার জন্যই ন্যাশনাল মিউজিয়মে কোপ পড়ছে কি না, তাও জানতে চেয়েছেন জহর।