নতুন মন্ত্রীদের খামতি কী, তরজা কংগ্রেস-বিজেপির

মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কাল অনুপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। কেন, তার সাফাই দেওয়ার আগেই সম্প্রসারিত মোদী মন্ত্রিসভায় রন্ধ্র খুঁজে বার করতে নেমে পড়ল কংগ্রেস। নতুন মন্ত্রীদের নিয়ে রাতভর গবেষণা চালিয়ে আজ জরুরি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র অজয় মাকেন। বলেন, “লোকসভা ভোট প্রচারে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে দাগী সাংসদদের বিতাড়িত করবেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৫
Share:

কংগ্রেসকে পাল্টা। সোমবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অরুণ জেটলি। নিজস্ব চিত্র

মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কাল অনুপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। কেন, তার সাফাই দেওয়ার আগেই সম্প্রসারিত মোদী মন্ত্রিসভায় রন্ধ্র খুঁজে বার করতে নেমে পড়ল কংগ্রেস।

Advertisement

নতুন মন্ত্রীদের নিয়ে রাতভর গবেষণা চালিয়ে আজ জরুরি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র অজয় মাকেন। বলেন, “লোকসভা ভোট প্রচারে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে দাগী সাংসদদের বিতাড়িত করবেন তিনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রিসভাতেই দাগীদের স্থান দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।” এ কথা বলেই আজ একে একে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নাড্ডা সহ গিরিরাজ সিংহ, রামশঙ্কর কথেরিয়া, সদানন্দ গৌড়া, ওয়াই এস চৌধুরীর বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন কংগ্রেস মুখপাত্র। বিশেষ করে ওয়াই এস চৌধুরী ও কথেরিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ফৌজদারি মামলার দাগ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁরা মন্ত্রিসভায়, সেই প্রশ্ন তোলা হয়।

সংসদের অধিবেশন বসার আগে কংগ্রেস যে সংঘাতেরই বার্তা দিচ্ছে, তা স্পষ্ট। কাল মনমোহন-সনিয়ার অনুপস্থিতি নিয়ে আজ মাকেন বলেন, “প্রশ্নটা সরকারকেই করা উচিত। বিরোধীদের মর্যাদা দেয়নি সরকার। অনৈতিক ভাবে কংগ্রেসকে বিরোধী দলনেতার আসনও দেওয়া হয়নি।”

Advertisement

মনমোহন জমানায় সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপি এমন অভিযোগ আনলে সরকার তো দূরের কথা, কংগ্রেস থেকেই কোনও প্রতিক্রিয়া আসতে দিন তিনেক লেগে যেত। কিন্তু আজ মাকেন অভিযোগ তোলার পরক্ষণেই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন নতুন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি বলেন, “মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের আগে নতুন মন্ত্রীদের ব্যাপারে সবিস্তার খোঁজ নিয়ে তবেই প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

কিন্তু মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তুলছে কংগ্রেস? আর জেটলিরই বা পাল্টা বক্তব্য কী?

টিডিপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ওয়াই এস চৌধুরী সম্পর্কে মাকেন বলেন, তাঁর ব্যবসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ৩১৭ কোটি ঋণ শোধ করেননি চৌধুরী। জেটলির জবাব, সংস্থাটি ক্ষতিতে চলছিল। ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করেই সেটি বন্ধ করে দেন চৌধুরী।

মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী রামশঙ্কর কথেরিয়ার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের মূল অভিযোগ, কথেরিয়া নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা পেশ করেছেন তাতে তাঁর বিরুদ্ধে ২৩টি ফৌজদারি মামলার উল্লেখ রয়েছে। জেটলির যুক্তি, উত্তরপ্রদেশে অখিলেখ সরকার এ ধরনের বহু মামলা করে রেখেছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে।

নতুন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নাডাকে নিয়ে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি-র অভিযোগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন এইমসের ভিজিল্যান্স অফিসারকে অপসারণের জন্য চিঠি দিয়েছিলেন নাড্ডা। জেটলির যুক্তি, এক জন সাংসদ এ রকম চিঠি দিতেই পারেন।

নতুন আইন মন্ত্রী তথা সদ্য প্রাক্তন রেলমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহও এখন কংগ্রেসের নিশানায় রয়েছেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, সদানন্দ গৌড়া যখন রেলমন্ত্রী হন তখন তাঁর ঘোষিত সম্পদের মূল্য ছিল ৯ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২০ কোটি টাকা! তা হলে কি কোনও দুর্নীতির অভিযোগেই তাঁকে সরালেন প্রধানমন্ত্রী? এন্য দিকে, তাঁর বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন গিরিরাজ। কিন্তু চোর ধরা পড়ে এবং জেরায় জানায়, সে নগদ সওয়া কোটি টাকা চুরি করেছিল। সব টাকা ফেরতও দেয় চোর। সেই মামলা এখনও চলছে। সদানন্দের ব্যাপারে জেটলি কৈফিয়ত না দিলেও তিনি দাবি করেন, গিরিরাজের বিরুদ্ধে কোনও মামলা চলছে না।

এখানেই থেমে থাকেননি জেটলি। তিনি বলেন, “সরকারের নীতি নিয়ে কোনও সমালোচনা করতে পারছে না কংগ্রেস। তাই ছুটকো বিষয় নিয়ে গলা ফাটাচ্ছে তারা!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement