National News

‘প্রতিবাদ করাটা সাংবিধানিক অধিকার’

দিল্লির জামা মসজিদের সামনে সিএএ, এনআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন দলিত নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ ওরফে রাবণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:১৪
Share:

ছবি: পিটিআই।

ধর্না দিলে সমস্যা কোথায়? প্রতিবাদ হলেই বা কী সমস্যা? আপনারা সংবিধান পড়েছেন?

Advertisement

একের পর এক প্রশ্ন। তিসহাজারি কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক কামিনী লাও-কে উত্তর দিতে পারছেন না দিল্লি পুলিশের আইনজীবী। উত্তরটা বিচারক নিজেই দিলেন। বললেন, ‘‘প্রতিবাদ করাটা সাংবিধানিক অধিকার।’’ শুধু তাই নয়। বিচারক এও বললেন, ‘‘সংসদে যে-কথাগুলো বলা দরকার ছিল, বলা হয়নি বলেই মানুষকে রাস্তায় নামতে হয়েছে।’’

দিল্লির জামা মসজিদের সামনে সিএএ, এনআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন দলিত নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ ওরফে রাবণ। আজ তাঁর জামিনের আর্জির শুনানিতে আদালতের মন্তব্য সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে যাবতীয় প্রতিবাদের জন্য এ ভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল। এই প্রতিবাদ শুরুর পর থেকেই গোটা দেশে পুলিশ যথেচ্ছ ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। দিল্লি পুলিশও ব্যতিক্রম নয়। অথচ গত সপ্তাহেই কাশ্মীর প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলেছে, মত প্রকাশ, ক্ষোভ প্রকাশ বা গণতান্ত্রিক অধিকার রুখতে ১৪৪ ধারা জারি করা চলে না। বার বার ১৪৪ ধারা জারি করাটা ক্ষমতার অপব্যবহারের শামিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: শাহিনবাগের রাস্তা খালির মামলা খারিজ দিল্লি হাইকোর্টে

আজ বিচারক কামিনী লাও দিল্লি পুলিশকে সেই রায়ের কথাই স্মরণ করিয়ে দেন। দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়, বিক্ষোভ দেখাতে গেলেও তার অনুমতি নিতে হয়। বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘‘কিসের অনুমতি? সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, বারংবার ১৪৪ ধারা জারি করা ক্ষমতার অপব্যবহার।’’ বিচারক বলেন, ‘‘আমি অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি, সংসদের বাইরেও অনেক মানুষ প্রতিবাদ করেছেন। সেই প্রতিবাদীদের অনেকে পরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন!’’

২১ ডিসেম্বর থেকে আজাদ জেলে বন্দি। জামা মসজিদের সামনে থেকেই দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। আজ আদালতের প্রশ্নের মুখে দিল্লি পুলিশের আইনজীবী আজাদের সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টের কথা তুলে ধরেন। কিন্তু বিচারক তা দেখতে চাইলে প্রথমে আইনজীবী দেখাতে রাজি হননি। তার পরে তিনি আজাদের একটি পোস্ট পড়ে শোনান, যেখানে তিনি জামা মসজিদে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। শুনে বিচারক মন্তব্য করেন, ‘‘এর মধ্যে কী দোষ রয়েছে? এর মধ্যে হিংসা কোথায়? আপনি এমন ভাব করছেন, যেন জামা মসজিদ পাকিস্তানে! যদি পাকিস্তানও হত, সেখানেও প্রতিবাদ করা যায়। পাকিস্তান অবিভক্ত ভারতের অংশ ছিল।’’

আজাদ ঠিক কী হিংসাত্মক কথা বলেছেন এবং তার কী প্রমাণ আছে, তা দিল্লি পুলিশকে দেখাতে বলেন বিচারক। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, অডিয়ো বা ভিডিয়ো রেকর্ডিং নেই। ড্রোন থেকে তোলা ছবি আছে আর সাক্ষীদের বয়ান আছে। বুধবার ফের শুনানি হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement