ভারতের প্রথম ডিজিটাল মূদ্রা ই রুপি। পরিষেবা প্রদানকারী এবং গ্রাহকের মধ্যে দ্রুততম লেনদেন নগদেই সম্ভব— এই ধারণা রয়েছে অনেকেরই। ই রুপি স্পর্শ এড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে একই সুবিধা দেবে দুই পক্ষকে। অথচ এখানে নগদ অর্থের কোনও প্রয়োজন পড়বে না।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ই-রুপির সুবিধা ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, ‘এটি একটি ভবিষ্যত্দর্শী ডিজিটাল অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া, যা ব্যবহারকারীদের অজস্র সুবিধা দেবে।’
জাতীয় পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া তাদের ইউপিআই পরিষেবার সাহায্যে ই রুপি তৈরি করেছে। তবে এব্যাপারে সাহায্য করেছে অর্থনৈতিক পরিষেবা দফতর, স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিভিন্ন ব্যক্তিভিত্তিক সরকারি প্রকল্প এবং পরিষেবার জন্য যে অর্থ দিতে হয়, তা এখন থেকে কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই দেওয়া যাবে ই রুপির সাহায্যে।
সাধারণ লেনদেন ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প যেমন, মা এবং শিশু কল্যাণ প্রকল্পের অধীনে ওষুধপত্র পৌঁছে দেওয়া, পুষ্টি সংক্রান্ত সরকারি সাহায্য, যক্ষা দূর করার প্রকল্প, আয়ুষ্মাণ ভারত, প্রধানমন্ত্রী জন যোজনা, সার ভর্তুকি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ই রুপির ব্যবহার করা যাবে।
বেসরকারি ক্ষেত্রেও এই ডিজিটাল ভাউচার ব্যবহার করে কর্মীদের কল্যাণমূলক কাজ করা যাবে বলে জানানো হয়েছে সরকারি বিবৃতিতে। এ ছাড়া কর্পোরেট দফতরগুলির যে বিভিন্নরকম সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে, সে ক্ষেত্রেও ই রুপি ব্যবহার করা যাবে।
ভারতের জাতীয় পেমেন্ট কর্পোরেশন এই পরিষেবা দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকেও এর সঙ্গে যুক্ত করেছে। ই রুপির জন্য সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ব্যাঙ্কেরই দ্বারস্থ হতে হবে।
যার নামে ভাউচার, তাঁর বিশদ তথ্য এবং কী জন্য অর্থ প্রদান করা হবে তা জানালে প্রাপকের মোবাইলে ভাউচার পাঠাবে ব্যাঙ্ক।
যে বা যারা পরিষেবা দিচ্ছে তাদের সঙ্গে গ্রাহককে সরাসরি ডিজিটাল মাধ্যমে যুক্ত করবে এই পরিষেবা।
বিভিন্ন জনকল্যাণকর প্রকল্পের বিরামহীন পরিষেবা নিশ্চিত করতেই এই ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় লেনদেনের ব্যবস্থা। এ সংক্রান্ত একটি সরকারি বিবৃতিতেই জানানো হয়েছে বিষয়টি। এই প্রক্রিয়ায় যেমন কোনও মধ্যস্থতাকারী থাকবে না তেমনই মাঝপথে অর্থ বা লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য চুরি যাওয়ার আশঙ্কাও থাকবে না বলে দাবি করছে কেন্দ্র।
ই রুপি আসলে এক ধরনের ই ভাউচার। আমরা যেমন গিফট ভাউচার কিনি, কিছুটা সে রকমই। তবে এ ক্ষেত্রে ভাউচারটি কিউআর কোড অথবা এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইলে পৌঁছে দেওয়া হবে।
একটি ই-ভাউচার অবশ্য একবারই ব্যবহার করা যাবে।
তবে এর জন্য কোনও কার্ড, পেমেন্ট অ্যাপ বা নেটব্যাঙ্কিংয়ের প্রয়োজন নেই। গ্রাহক যেখান থেকে পরিষেবা নিচ্ছেন বা কিছু কিনছেন সেখানে সরাসরি ওই ভাউচারের বিনিময়ে ক্রয় করা যাবে।
ই রুপি হল গ্রাহক এবং পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার মেলবন্ধনের একটি সেতু।
এই প্রক্রিয়ায় ক্রেতা বা গ্রাহক লেনদেন সম্পূর্ণ হয়েছে বলে নিশ্চিত করলে তবেই বিক্রেতা ওই ভাউচারের অর্থ হাতে পাবেন।
যে হেতু ব্যবস্থাটি প্রিপেড অর্থাৎ ক্রেতা আগে থেকেই টাকা দিয়ে ওই ভাউচার কিনেছেন, তাই ভাউচারের অর্থ আটকে থাকার সমস্যা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। কোনও মধ্যস্থতাকারীর সাহায্য ছাড়াই বিক্রেতা বা যাঁরা অর্থের বিনিময়ে পরিষেবা দিচ্ছেন, তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য হাতে পাবেন।