বুধবার লোকসভার হামলার সেই মুহূর্ত। ছবি: এক্স।
লোকসভায় বুধবার হানা দেন দুই যুবক। তাঁরা সভা চলাকালীন দর্শকদের গ্যালারি থেকে চেম্বারে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং হলুদ ধোঁয়া ছড়িয়ে দেন সভার চারদিকে। বেঞ্চ থেকে বেঞ্চে লাফিয়ে ‘রং বোমা’ ছুড়েছিলেন ওই বহিরাগতেরা। ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োগুলিতে দেখা গিয়েছে, সংসদে বক্তৃতা করছিলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর কথার মাঝেই হঠাৎ গোলমাল শুরু হয় সভায়। পড়তে পড়তে খগেন থেমে যান। বাকি সাংসদদের মধ্যেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। শোনা যায়, চিৎকার করে কেউ বা কারা বলছেন, ‘‘ধরো ধরো, ওকে ধরো!’’
লোকসভা কক্ষের বেঞ্চের উপরে তত ক্ষণে উঠে পড়েছেন ‘বহিরাগত’ যুবক। পায়ের কাছ থেকে কিছু একটা বার করেন তিনি। তার পর ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন চারদিকে। অন্য এক যুবককেও একই কাজ করতে দেখা যায়।
কক্ষের ভিতর তখন শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকে দূরে সরে যাচ্ছিলেন, অনেকে আবার যুবকদের ধরার চেষ্টা করছিলেন। এর মাঝেই ঘোষণা করা হয়, লোকসভার অধিবেশন দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি করা হচ্ছে। হলুদ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় সভাকক্ষ।
হানাদার দুই যুবককে ধরেন লোকসভারই দুই সাংসদ। তাঁরা হলেন বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সাংসদ মালুক নাগর এবং রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টির (আরএলপি) সাংসদ হনুমান বেনিওয়াল। যুবকদের ধরে তাঁরাই নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুলে দেন।
পরে একাধিক ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, নিরাপত্তারক্ষীরা যখন হানাদারদের আটক করে নিয়ে যাচ্ছেন, তখনও তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। ‘একনায়কতন্ত্র চলবে না’, চিৎকার করে বলতে শোনা গিয়েছে তাঁদের। সভাকক্ষের বাইরে থেকে এক মহিলা এবং আরও এক যুবককে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর লোকসভার বাইরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ২টোর পর আবার শুরু হয় অধিবেশন। সংসদের বাইরে প্রত্যক্ষদর্শীরা গোটা ঘটনার বর্ণনা দেন। যে হলুদ ধোঁয়া সভার ভিতরে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তা বিষাক্ত কি না, তা নিয়েই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অনেকে।
এর আগে ২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হামলা হয়েছিল এই ১৩ ডিসেম্বরেই। বুধবারের ঘটনা ২২ বছর আগের সেই স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা।