ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ফাইল চিত্র।
কোথায় গেলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন? তাঁর খোঁজে তল্লাশি জারি রেখেছেন এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট (ইডি)-এর আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে খবর, বিমানবন্দরেও সোরেনকে নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। রবিবার রাতেই চার্টার্ড বিমানে করে রাঁচীর সরকারি বাসভবন থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান হেমন্ত। ঘটনাচক্রে, তার আগে সোরেনকে তলব করেছিল ইডি। তার পরই তিনি দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বলে বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি।
সেই খবর পাওয়ার পরই সোমবার সোরেনের দিল্লির বাসভবনে যান ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু ইডির দাবি, সেখানে সোরেনের দেখা মেলেনি। টানা ১৩ ঘণ্টা ধরে সেখানে তল্লাশি চালান তাঁরা। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সোরেনের বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান। ইডি সূত্রে খবর, সোরেনকে না পাওয়া গেলেও তাঁর বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে বেশি কিছু নথি, নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
ইডি সূত্রের খবর, সোরেনের দিল্লির বাসভবন থেকে দু’টি বিএমডব্লিউ গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সোরেনের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে দাবি ইডির। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি দিল্লি বিমানবন্দরেও নজর রেখেছে বলে সূত্রের খবর। এই তল্লাশি চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ইডিকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, ৩১ জানুয়ারি দুপুর ১টায় রাঁচীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হবেন সোরেন। ফলে জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে যে, ইডির জেরা আটকাতে আবার আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন তিনি। ইতিমধ্যেই সোরেনের রাঁচীর সরকারি বাসভবন রাজ ভবনের ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সোরেনকে ইডি মোট ন’বার তলব করলেও প্রতি বারই তা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। গত শনিবার তাঁকে আবার নতুন করে সমন পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রথমে তাঁকে ২৭ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজির হয়ে তদন্তপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যুত্তর না পেয়ে পরে তাঁকে ২৯ কিংবা ৩১ জানুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সময় রাখতে বলা হয়। কিন্তু তার মধ্যেই সোমবার দিল্লিতে সোরেনের বাসভবনে হাজির হয় ইডি। কিন্তু তাদের দাবি, সেখানে সোরেনকে পাওয়া যায়নি।
গত ২০ জানুয়ারি রাঁচীতে হেমন্তের সরকারি বাসভবনে হানা দিয়েছিল ইডি। প্রায় সাত ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এ তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়। তার পরই ইডি সূত্রে জানা গিয়েছিল, বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব না মেলায় হেমন্তকে ফের সমন পাঠানো হবে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন যে, নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দিতেই এবং রাজ্যে অস্থিরতা তৈরি করতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করছে বিজেপি।