পশ্চিমবঙ্গ-সহ সাত রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতি। — গ্রাফিক্স শৌভিক দেবনাথ।
চলতি বছর সময়ের আগেই ভারতে ঢুকেছে বর্ষা। তার পর আড়াই মাস কেটে গিয়েছে। দেশের সাতটি রাজ্য এখনও যথেষ্ট বৃষ্টি থেকে বঞ্চিত। তৈরি হতে পারে খরা পরিস্থিতি। তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। বৃষ্টির অভাবে কমেছে ধান উৎপাদনও।
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক, প্রায় ৩৬০ কোটি মানুষ খরা অধ্যুষিত এলাকায় বাস করেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ খরা অধ্যুষিত দেশের একটি সূচক প্রকাশ করেছে। তাতে নাম উঠেছে ভারতেরও। এখানেই শেষ নয়। এ বছর দেশে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডের মতো ধান উৎপাদনকারী রাজ্যেই রয়েছে বৃষ্টির ঘাটতি।
উত্তর-পূ্র্ব ভারতের রাজ্যগুলোয় বহু কৃষক বিপাকে। বৃষ্টির অভাবে বহু অঞ্চলে কৃষকরা সঠিক সময়ে ধান বুনতে পারেননি। অনেকে ধান বুনলেও তা জলের অভাবে শুকিয়ে গিয়েছে। চলতি বর্ষার মরসুমে ১৬ অগস্ট পর্যন্ত সব থেকে কম বৃষ্টি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। স্বাভাবিকের থেকে ৪৪ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ডে স্বাভাবিকের থেকে ৩০ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের তুলনায় এ বার ভারতে ১২ শতাংশ কম জমিতে ধান বোনা হয়েছে। ২০২১-২২ সালে ভারতের মোট ৩৫৩.৭৯ লক্ষ হেক্টরে ধান চাষ হয়েছিল। ২০২২-২৩ সালে ৩০৯.৭৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে গত বছর ধান চাষ হয়েছিল ৩৫.৫৩ লক্ষ হেক্টর জমিতে। এ বছর তা হয়েছে ২৪.৩০ লক্ষ হেক্টর জমিতে।
১৯৯৭ সাল থেকে দেশে খরাপ্রবণ এলাকার পরিমাণ বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। ২০২০ থেকে ২০২২ সালে দেশের দুই-তৃতীয়াংশই খরাপ্রবণ এলাকা। প্রতি বছর দেশে পাঁচ কোটি মানুষ এই খরার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হন। রাষ্ট্রপুঞ্জ বলছে, ২০৫০ সালে গোটা পৃথিবীর ৭৫ শতাংশ মানুষই খরার ফল ভুগবে। টান পড়বে পেটে। বাড়বে ঘর ছাড়ার প্রবণতা।