রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ছবি: সংগৃহীত।
আর জি করের ঘটনাকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশ যখন উত্তাল, তখন দিল্লিতে এসে আজ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৈঠকে কী হয়েছে তা নিয়ে রাজভবন নীরব থাকলেও, সূত্রের মতে, রাষ্ট্রপতিকে আর জি করের ঘটনা এবং পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সম্ভবত একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তিনি।
ওই দুই সাক্ষাতের পাশাপাশি আজ রাজ্যে নারীদের সুরক্ষা ও রাজ্যবাসীর নিরাপত্তর কথা মাথায় রেখে রাজভবনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়। রাজভবন সূত্রে জানানো হয়েছে, ০৩৩-২২০০১৬৪১ এবং ৯২৮৯০১০৬৮২, ওই দুটি নম্বরে ফোন করে রাজ্যবাসী তাঁদের মতামত ও সাহায্য চাইতে পারবেন। আজ ওই কন্ট্রোল রুম থেকে প্রথম ফোনটি তিনি আর জি করে মৃত চিকিৎসকের বাবাকে করেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। ফোনে তিনি মৃতার বাবাকে বলেন, “আমরা সবাই আপনার সঙ্গে আছি। আপনি অবশ্যই ন্যায় পাবেন। আমি এখন দিল্লিতে রয়েছি। এখানে সব নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি।... আপনার সুবিধা মতো আপনাদের বাড়ি যাব...।”
তবে রাজ্যপালের তরফে মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সেই ভিডিয়ো সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন। তাঁর বক্তব্য, "আপনি তরুণীর বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলে সেটি রেকর্ড করে যে প্রচারে নেমেছেন, তা অনৈতিক ও কুরুচিকর। একটি জঘন্য ঘটনাকে আত্মপ্রচারের জন্য এ ভাবে ব্যবহার না করার অনুরোধ করছি।"
সুপ্রিম কোর্ট আজ আর জি কর নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছে তাকেও স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যপাল। একটি ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, “গোটা দেশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছে। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি সাধুর যেমন একটি অতীত থাকে, তেমনই প্রত্যেক অপরাধীর একটি ভবিষ্যৎ থাকে। কেউ কি শুনছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি হাত তুলবেন?”
সরাসরি মমতাকে এ ভাবে নিশানা করায় রাজ্যপালের ওই মন্তব্য নিয়ে পাল্টা সরব তৃণমূল নেতৃত্ব। ডেরেক বলেন, “আপনার ভিডিয়োর মাধ্যমে আপনি যে সাংবিধানিক শীর্ষ পদে রয়েছেন, তাকে অপমান করেছেন। আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে সমর্থন করি। আপনার মতো একজন এ নিয়ে ভিডিয়োতে বক্তব্য রাখছেন। যিনি নিজের রাজভবনে একজন মহিলার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ব্যর্থ। আপনি নিজেকে প্রশ্ন করতে পারেন, আমার কি এই বিষয়ে কিছু বলার অধিকার রয়েছে?”