প্রতীকী ছবি।
এক আগন্তুক সেজেগুজে তৈরি। অন্য আগন্তুকের সাজগোজ চলছে জোর কদমে। জোড়া প্রাকৃতিক অতিথির প্রায় একই সঙ্গে এমন আবির্ভাব সচরাচর দেখা যায় না। প্রমাদ গুনছে পূর্ব উপকূলের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ এবং পশ্চিম উপকূলের গুজরাত।
অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মহা’ ঘনীভূত হয়েছে আরব সাগরে। তার অভিমুখ গুজরাতের দিকে। মৌসম ভবন মঙ্গলবার জানায়, বঙ্গোপসাগরে ফের ঘনীভূত হতে চলেছে একটি ঘূর্ণিঝড়। এ দিন গভীর নিম্নচাপের রূপে থাকলেও আজ, বুধবার সে ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে, ধেয়ে আসবে ওড়িশা ও বাংলা উপকূলের দিকে। তবে সে ঠিক কোথায় আছড়ে পড়বে, ঘূর্ণিঝড় হয়ে ওঠার আগে তা নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে আবহবিদেরা জানান।
উত্তর ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে ‘বুলবুল’। নামটি পাকিস্তানের দেওয়া। আলিপুর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, ঘূর্ণিঝড়টি কোন দিকে যাবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে উত্তর ওড়িশা থেকে বাংলাদেশ— এর মধ্যেই থাকবে তার অভিমুখ। শনিবার উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার রাত থেকে ঝোড়ো হাওয়া বইবে উপকূলীয় এলাকায়।
এক দিকে আরব সাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় চোখ রাঙাচ্ছে এবং একই সময়ে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলেছে অন্য একটি ঘূর্ণিঝড়— সাধারণত এমনটা দেখা যায় না বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বা সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সুগত হাজরা জানাচ্ছেন, উত্তর ভারত মহাসাগরে জলের তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। তার প্রভাবেই পরপর তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। ২০০৫-এ অতলান্তিক মহাসাগরে এই প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। সাগরজলের এই তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু বদলের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘মায়ের কিছু হলে দায়ী থাকবে সরকার’, হুঁশিয়ারি মেহবুবা মুফতির কন্যার
বর্ষা-পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এ বার বর্ষা বিদায় নিতে না-নিতেই একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে চলেছে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলা ঘূর্ণিঝড়টিকে ধরলে চলতি বছরে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে সাত। গত বছরেও এই দুই সাগর মিলিয়ে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে, ১৯৮৫ সালে এক বছরে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির নজির আছে। ২০১৩ সালে তৈরি হয়েছিল মোট পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়।