উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: পিটিআই।
টানা এবং প্রবল বৃষ্টির জেরে দেওয়াল ভেঙে দুটি দুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে মুম্বই এবং কল্যাণে। দুটি দুর্ঘটনাই ঘটেছে সোমবার রাতে।
সোমবার রাত ২টো নাগাদ একটি আবাসনের দেওয়াল ভেঙে পড়ে মুম্বইয়ের মালাড ইস্টে। তাতে ১৩ জন দেওয়াল চাপা পড়ে মারা যান। আর চার জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। উদ্ধারকাজ চলছে। দেওয়ালের নীচে তিন থেকে পাঁচ জনের চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকারীরা।
এর আগে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ মুম্বইয়ের কাছে কল্যাণে একটি স্কুলের দেওয়াল ভেঙে পড়ে। তাতে চাপা পড়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে তিন বছরের একটি শিশুও রয়েছে। স্কুলের ধ্বংস্তূপের নীচে এখনও চার জন আটকে রয়েছেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। দেওয়াল কেটে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে পরিষেবা, সমান্তরাল ব্যবস্থা চান মমতা
গত পাঁচ দিন ধরেই মুম্বইয়ে বৃষ্টির দাপট চলছিল। তার উপর রবিবার থেকে ২০০ মিলিমিটার বা তারও বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে প্রতিদিন। রাস্তাঘাট, রেলপথ— প্রায় সবই জলমগ্ন হয়ে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাণিজ্য নগরীর জনজীবন। আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা, আগামী তিন দিন আরও ভারী বৃষ্টিপাত হবে মুম্বই, ঠাণে এবং পালঘরে। বেসরকারি সংস্থা স্কাইমেট ৩ এবং ৫ তারিখের মধ্যে মুম্বইয়ে বন্যা-সতর্কতা জারি করেছে।
জলমগ্ন রেল লাইন। দাঁড়িয়ে পড়েছে ট্রেন। মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।
সূত্রের খবর, টানা বৃষ্টির জেরে মুম্বই বিমানবন্দরের রানওয়ে অত্যন্ত পিছিল হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার অবতরণের পর একটা স্পাইসজেট বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। বিমানটা জয়পুর থেকে এসেছিল। যদিও বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। যাত্রীদের নিরাপদে বাইরে আনা হয়েছে। তবে বিপদ এড়াতে মুম্বই বিমানবন্দরের মূল রানওয়ে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় একটি রানওয়ে থেকে বিমান ওঠানামা করছে। এখনও পর্যন্ত ৫৪টি বিমানের মুখ ঘুরিয়ে অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হয়েছে। কিছু আন্তর্জাতিক বিমান বেঙ্গালুরু এবং আমদাবাদে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুম্বই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মূল রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বিমান ওঠানামাতেও দেরি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রোনাল্ড রস মেডিক্যালের ছাত্র! ফের বিতর্কে নির্মল মাজি
বিমানবন্দর যাওয়ার মূল রাস্তা ওয়েস্টার্ন এক্সপ্রেস হাইওয়ে সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে পড়ায় রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়েছে। ফলে সময়ে ফ্লাইটের জন্য সময়ে পৌঁছতেও পারেননি অনেকে। মুম্বইয়ে গত দু’তিন ধরে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। তাতে ক্রমশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। আজ, মঙ্গলবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে, জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। স্কুল, কলেজ-সহ সমস্ত সরকারি অফিস আজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়াও রেল ট্র্যাকে জল জমে যাওয়ায় ট্রেন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে। সোমবার থেকেই মুম্বই-সুরাত শাখার বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যে সমস্ত ট্রেন চালানো যাচ্ছে, দুর্ঘটনা এড়াতে তার গতি অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে। সোমবার মুম্বই এবং পুণের মধ্যে একটা জায়গায় মালগাড়ি লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছিল।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।