ফাইল চিত্র।
হুমকির আঁচ এ বার পনীরসেলভমের গায়ে!
হুমকি দিয়ে সমর্থনপত্রে সই করিয়ে শশিকলার বিরুদ্ধে যে ১২০ জন বিধায়ককে বন্দি করার অভিযোগ তিনি এনেছিলেন, এ বার সেই বিধায়করাই খুনের হুমকির অভিযোগ আনলেন পনীরের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে গোল্ডেন বে রিসর্টে পুলিশি তদন্তের সময়ে ওই বিধায়কেরা প্রত্যেকে আলাদা করে পুলিশের কাছে এই অভিযোগ জানান। তাঁরা জানান, শশির ভয়ে নয়, উল্টে পনীর-শিবিরই তাঁদের ক্রমাগত খুনের হুমকি দিচ্ছিল। প্রাণে বাঁচতেই তাঁরা এই রিসর্টে ঠাঁই নিয়েছেন।
বুধবার রাত থেকে আচমকা এআইএডিএমকে-র ১২০ জন বিধায়ক নিখোঁজ হয়ে যান। পরে জানা যায়, বিধায়ক হস্টেল ছেড়ে গোল্ডেন বে রিসর্টে তাঁরা আস্তানা গেড়েছেন। পনীর-শিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে, শশিকলা তাঁদেরকে হুমকি দিয়ে সেখানে আটকে রেখেছেন। মাদ্রাজ হাইকোর্টও চেন্নাইয়ের পুলিশ কমিশনারকে তলব করে বিধায়ক বন্দির অভিযোগের রিপোর্ট চায়। তদন্ত করতেই শনিবার ভোর সাড়ে ৬টায় চেন্নাই পুলিশের একটি দল ওই রিসর্টে যায়। প্রত্যেক বিধায়ককে আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সে সময়েই পনীরের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ আনেন তাঁরা। পুলিশের কাছে এক বিধায়ক বলেন, ‘‘আমাদেরকে কেউ অপহরণ করাননি, উল্টে পনীরকেই বিরোধী দল ডিএমকে অপহরণ করেছে। তিনি একেবারেই দলের অনুগত নন। তাঁর হুমকির জেরেই আমরা এখানে রয়েছি। উপরন্তু ৩৩ বছর ধরে আম্মার পাশে রয়েছেন চিনাম্মা। রাজ্যপালের সম্মতি পেলেই তিনি সরকার গড়বেন।’’
বিধায়কদের এই অভিযোগে হাওয়া ফের পনীরের উল্টে দিকে বইতে শুরু করেছিল। কিন্তু শনিবার এআইএডিএমকে-র দুই সাংসদ এবং এক মন্ত্রী পনীর-শিবিরে যোগ দেওয়ায় কিছুটা হলেও তিনি স্রোতের অনুকূলে পালে হাওয়া পেলেন বলে মনে করছেন রাজনীতিবিদেরা। তামিলনাড়ুর স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী পান্ডিয়ারাজন, নামাক্কাল সাংসদ পি আর সুন্দরম এবং কৃষ্ণগিরির সাংসদ অশোক কুমার এ দিন সকালে পনীরসেলভমের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানেই শশি বনাম পনীরের যুদ্ধে তাঁকেই সমর্থন করার আশ্বাস দেন তাঁরা। পনীর-শিবিরে যোগ দেওয়ার আগে অবশ্য টুইট করে জনমত জানতে চেয়েছিলেন স্কুল শিক্ষামন্ত্রী পান্ডিয়ারাজন। তাঁর বিধানসভা আভাদির বেশির ভাগ লোকই পনীর-শিবিরে যোগ দিতে বলায় তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে তিনি বাসভবনের বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের জানান। বলেন, তাঁদের মতো গোল্ডেন বে রিসর্টে থাকা সমস্ত বিধায়কও নাকি শশিকে ছেড়ে পনীর-শিবিরে যোগ দিতে চান। যদিও পুলিশের দাবি অনুযায়ী, গোল্ডেন বে রিসর্টে বাস করা বিধায়কদের থেকে অবশ্য উল্টোটাই শোনা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘চিকুকে বললাম, ডিআরএসটা এর পরে নিস’
পাশাপাশি, রাজ্যপালকে জমা দেওয়া সমর্থনপত্রের সত্যতা প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শশিকলা। এ দিনই রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাওয়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে সময় চেয়েছেন তিনি। যাঁরা তাঁকে সমর্থন করেছেন, সেই সমস্ত বিধায়ককেও হাজির করতে চান রাজ্যপালের সামনে। রাজ্যপালকে চিঠি লিখে শশিকলা জানিয়েছেন, ‘পনীরসেলভম মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সাত দিন কেটে গিয়েছে। রাজ্যপাল ইস্তফাপত্র গ্রহণও করেছেন। সংবিধান, গণতন্ত্র এবং তামিলনাড়ুর স্বার্থে খুব দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমি তাই সমস্ত বিধায়ককে নিয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’’ রাজ্যপালের তরফে অবশ্য এখনও এই চিঠির উত্তর মেলেনি।