১০৯০ চৌরাহার সেই ‘জঞ্জাল এটিএম’।—নিজস্ব চিত্র।
উন্নয়নের কল্যাণে লখনউয়ের একটা অংশ একেবারেই পাল্টে গিয়েছে। গত পাঁচ-সাত বছরের সেই পরিবর্তন এখন রীতিমতো চোখ ধাঁধানো। মুখ্যমন্ত্রীর আবাস পেরিয়ে গোমতী নগরের দিক দিয়ে যে জাতীয় সড়ক সোজা বারাবাঁকির দিকে এগিয়ে গিয়েছে, তার দু’পাশের গোটাটাই ঝাঁ-চকচকে। আর গোমতীর তীরে বড় বড় পার্ক। সাতসকালে নবাবি শহরের সেই চকচকে ভাবটা যেন আরও খানিকটা উজ্জ্বল।
নবাবি শহর লিখলাম বটে, কিন্তু এ দিকটার সঙ্গে দেশের অত্যাধুনিক যে কোনও শহরের বড্ড বেশি মিল। এক শহরের ভিতরে লখনউয়ে আসলে দুটো শহর বাস করে। পুরনো লখনউয়ে ইদানীং একটু পালিশ পড়েছে বটে, তবে এ দিককার তুলনায় তা নিতান্তই অল্প।
চৌধরি চরণ সিংহ বিমানবন্দর থেকে ইন্দিরানগরের দিকে চলেছে উব্র। গোমতী নদীর সেতুটা পেরিয়েই বাঁ দিক ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়লেন রশিদ। উব্র চালক রশিদের বয়স মেরেকেটে তিরিশ। জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘এটা কোন জায়গা?’’
—জনাব, ইয়ে হ্যায় ১০৯০ চৌরাহা। আপ থোড়া বৈঠিয়ে। হম পানি ভরকে আতে হ্যায়।
চার পাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় দশের ভিতর অন্তত নয় পাবে।
রশিদ নেমে যেতেই নজরে এল, আমার ঠিক বাঁ দিকে একটা বড়সড় যন্ত্র রাস্তার পাশে দাঁড় করানো। গায়ে লেখা ‘ড্রাই ওয়েস্ট কালেকশন কিয়স্ক’। চার পাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় দশের ভিতর অন্তত নয় পাবে। এখানে রাস্তা যেন কাটাকুটি খেলছে। বিভিন্ন দিক থেকে আসা বেশ কয়েকটা রাস্তার একটা জংশন বলা যেতে পারে। তারই এক পাশ দিয়ে নেমে যাওয়া যায় নীচের পার্কে। ছুটির দিন বলে অনেকেই এই সাতসকালে ঘুরতে এসেছেন। গাড়ি রাস্তার পাশেই দাঁড় করিয়ে রাখা। যানজটের কোনও সম্ভাবনা নেই, এতটাই প্রশস্ত ‘নবাবপথ’।
একরাশ কৌতূহল নিয়ে অচেনা যন্ত্রটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। দেখতে চেনা এটিএম যন্ত্রেরই মতো প্রায়। তবে, বেশ খানিকটা বড়। উপরে রয়েছে টাচ স্ক্রিন। যন্ত্রের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক জনকে জিজ্ঞেস করতে বললেন, ‘‘এই যন্ত্রে কাচের বোতল থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগ, কাগজের কাপ থেকে কোল্ড ড্রিঙ্কের ক্যান— যেটাই ফেলবেন, পূর্ব নির্ধারিত দাম আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাবে।’’ যে হেতু বাতিল জিনিসের বিনিময়ে টাকা মিলছে এবং তা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই— তাই, স্থানীয়রা ‘জঞ্জাল এটিএম’ বলেই ডাকেন।
দেখুন ভিডিও...
হাতেকলমে পরীক্ষা করার ইচ্ছেটা সামলানো গেল না। ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে আনলাম। স্ক্রিন ছোঁয়া মাত্রই ১০ সংখ্যার মোবাইল নম্বর জানতে চাওয়া হল। এর পর মোবাইলে এল একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম বা এক বার ব্যবহারযোগ্য পাসওয়ার্ড)। স্ক্রিনে ওটিপি দেওয়া মাত্রই একটি ডাউনলোড লিঙ্ক চলে এল। সেই লিঙ্ক খুলে ডাউনলোড করা যাবে ‘ম্যাক্স পে’ নামের একটা ই-ওয়ালেট।
ওটিপি দেওয়ার পর স্ক্রিনে জানতে চাওয়া হল, আপনি কী ধরনের বর্জ্য জমা করতে চান। কাচ, না কি প্লাস্টিক... ইত্যাদি। তার পরেই এটিএম-এর গায়ে বিভিন্ন খোপের মধ্যে একটি খুলে গেল। জলের বোতলটি সেখানেই ফেললাম। ঠিক মতো জমা হয়েছে কি না তা জানিয়ে দিল ওই স্ক্রিন। মোবাইলেও এসে গেল বার্তা। সঙ্গে আমার অ্যাকাউন্টে ১ টাকা জমা হওয়ার খবরও এল। কিন্তু, অ্যাকাউন্ট নম্বর তো জানতে চাইল না যন্ত্র!
কী মনে হচ্ছে? অবিশ্বাস্য! একেবারেই নয়। ঘোরতর বাস্তব। তবে কলকাতার মানুষের কাছে এক্কেবারে অচেনা এই যন্ত্রটি ইতিমধ্যেই দেখে ফেলেছে দিল্লি। তার পর লখনউ। সম্প্রতি বসেছে বারাণসীতেও।
ওই যন্ত্রে বাতিল কাচের বোতল, নরম পানীয়ের ক্যান, জলের বোতল, প্লাস্টিকের ব্যাগ যেমন বিক্রি করা যাচ্ছে, তেমনই আর কিছু দিনের মধ্যে নাকি বেচে দেওয়া যাবে ই-বর্জ্যও। সব কিছুরই দাম পূর্ব নির্দিষ্ট। যেমন, প্লাস্টিকের একটা জলের বোতল জমা দিলে পাওয়া যাচ্ছে ১ টাকা। কাচের বোতল বা গ্লাসের দাম ২ টাকা। টিনের প্রতিটি ক্যানের দাম ৫০ পয়সা। এ ছাড়া প্লাস্টিকের প্যাকেট, কাগজের গ্লাস বা কাপ প্রতি মিলবে ২০ পয়সা। শুধু তাই নয়, ওই এটিএম মেশিনকে কেন্দ্র করে প্রায় ২ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে মিলছে ফ্রি ওয়াইফাই পরিষেবাও।
স্বচ্ছ ভারত মিশন নিয়ে বিভিন্ন রকমের উদ্যোগ গত কয়েক বছরে চোখে পড়েছে। কিন্তু, এমনটা তো কোথাও দেখিনি। খবর নিয়ে জানলাম, এই ‘জঞ্জাল এটিএম’-এর উদ্ভাবক মধুরেশ সিংহ। বেশ উত্সাহিত হয়েই তাঁকে মোবাইলে ধরলাম। কী ভাবে এমন ভাবনা মাথায় এল? ভবিষ্যৎ ভাবনা কী? কেমন সাফল্য পেল ‘জঞ্জাল এটিএম’? আর কোথায় কোথায় বসবে? যাদের স্মার্ট ফোন নেই তাঁরা কি টাকা পাবেন না? এই জঞ্জাল বিক্রির টাকা কোথা থেকে আসবে? মানে বিক্রেতাকে টাকা কে দেবেন? এই জঞ্জাল দিয়ে কী কী তৈরি হয়? যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁরা কি জঞ্জাল ফেললে কিছুই পাবেন না? ইত্যাদি প্রশ্ন শুনে বছর তিরিশের মধুরেশ অনেকটা হেসে শুধু বললেন, ‘‘আর কোনও প্রশ্ন আছে?’’
সেই হাসির শব্দ শুনে মনে হচ্ছিল, দিল্লিতে নয়, মধুরেশ পাশেই বসে রয়েছেন। লখনউতে। এর পরের বাক্যটা ছিল, ‘‘আপনি আমাকে ম্যাক্স নামে ডাকতে পারেন।’’ তার পর আবারও একটা লম্বা হাসি। এত ক্ষণে বুঝলাম, ম্যাক্সপে ই-ওয়ালেট আসলে মধুরেশের নামেই। এর পর প্রায় দু’ঘণ্টা ম্যাক্সের সঙ্গে আলোচনায় অনেক কিছু জানা এল।
মোবাইলে ‘ম্যাক্স পে’ ডাউনলোড করাটা এ ক্ষেত্রে অনেকটা বাধ্যতামূলক। কারণ, ওই অ্যাপেই আপনাকে আধার তথ্য জানাতে হবে। আর সেই সুবাদেই আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর জুড়ে যাবে ওই ই-ওয়ালেটের সঙ্গে। কিয়স্কে জঞ্জাল ফেলার পর আপনার বরাদ্দ ঢুকে পড়বে সেই অ্যাকাউন্টে। মোবাইল ফোন লাগবেই। কিন্তু, যাঁদের স্মার্ট ফোন নেই বা সঙ্গে সঙ্গেই যদি কেউ ওই অ্যাপ ডাউনলোড না করেন, তাঁদেরও চিন্তা নেই। ম্যাক্সের কথায়, ‘‘খুব শীঘ্রই আমরা গ্রাহকদের জন্য একটা ডেবিট কার্ড নিয়ে আসছি। ওটা ব্যবহার করে যে কোনও এটিএম থেকেই তোলা যাবে টাকা। আপনার মোবাইল নম্বরের হিসাবে আমাদের কাছে টাকা জমা থাকবে। আপনি যখনই অ্যাপ ডাউনলোড করবেন, তখনই সমস্ত বকেয়া অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে।’’ তবে, ওয়ালেট থেকেও হাজারো একটা সুবিধা মিলবে। জঞ্জাল বিক্রির টাকা জমিয়ে সেখান থেকে কাটা যাবে বিমান থেকে সিনেমা হলের টিকিট— এমনই নানাবিধ পরিষেবা।
স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় পরীক্ষামূলক ভাবে এমন স্বয়ংক্রিয় দু’টি যন্ত্র গত বছরের মাঝামাঝি দিল্লিতে বসানো হয়েছিল। ম্যাক্সের কথায়, ‘‘শুরুতেই ব্যাপক সাড়া মিলেছিল। ইন্ডিয়া গেট এবং কনট প্লেসের ওই দুই যন্ত্রে প্রথম ২১ দিনে প্রায় ২৯ হাজার মানুষ ‘জঞ্জাল’ ফেলেছিলেন।’’ ওই সাফল্যের পরেই দেশের প্রায় সব বড় শহরে ‘জঞ্জাল এটিএম’ বসানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের নগরোন্নয়ন বিভাগ। এই মুহূর্তে দিল্লি, লখনউ এবং বারাণসী— এই তিন শহরে প্রায় ১৫টি করে যন্ত্র বসানো হয়েছে বলে জানালেন ম্যাক্স। এর পর মুম্বই, চণ্ডীগড়, পুণে, হায়দরাবাদ, অমদাবাদ— তালিকা বেশ দীর্ঘ। কিন্তু, কলকাতা নেই। কেন? মধুরেশের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পে ছাড়পত্র দিতেই আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু, বছর দুয়েক হয়ে গেল আমাদের পাঠানো চিঠির কোনও জবাব পাইনি।’’
কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে ২০১৫ সালে প্রথম এই ‘জঞ্জাল এটিএম’-এর প্রস্তাব দিয়েছিলেন মধুরেশ। উত্তরাঞ্চলের রানিখেতের ছেলে। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা। মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ম্যাক্স কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’-এর জন্য এই প্রকল্পের প্রস্তাব দেন। পরে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক সেই প্রস্তাব মেনে নেয়। পরীক্ষামূলক ভাবে দিল্লিতে চালু হয় ‘জঞ্জাল এটিএম’।
ম্যাক্স তথ্য দিলেন, ভারতে ১ লাখ ৪০ হাজার টন জঞ্জাল প্রতি দিন তৈরি হয়। যার ৮৩ শতাংশ সরকারি ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পৌঁছয়। তার মাত্র ২৯ শতাংশ বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়। দিল্লিতে প্রতি দিন ৯ হাজার টন, মুম্বইতে ১১ হাজার টন, কলকাতায় ৪ হাজার টন এবং চেন্নাইতে ৪ হাজার ৮০০ টন আবর্জনা তৈরি হয়। কিন্তু, এর বেশির ভাগকেই পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা সম্ভব হয় না। মধুরেশের দাবি, ‘‘ঠিক মতো উদ্যোগ নিলে এই ‘জঞ্জাল এটিএম’-এর মাধ্যমে যে কোনও শহরের বেশির ভাগ বর্জ্যকেই পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা সম্ভব হবে।’’
আরও পড়ুন
নবান্নে মমতার কাছে চন্দ্রশেখর, ‘ফ্রন্ট’ জল্পনা তুঙ্গে
গ্রাহককে জঞ্জালের জন্য টাকা দিচ্ছে কে? ম্যাক্স জানালেন— রিসাইক্লিং কোম্পানি, যারা ওই জঞ্জালকে পুনর্ব্যবহার্য করে তুলবে। কিন্তু, এখানে যা দাম মিলছে বাজারে কি একই দাম?
নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটের সামনে ‘জঞ্জাল এটিএম’।
ম্যাক্সের দাবি, এখানে বেশি দাম মিলছে। বাজারে প্রতি কিলোগ্রাম হিসাবে দাম মেলে। তাঁর কথায়, ‘‘আপনি বিক্রি করতে গেলে, এক কেজি প্লাস্টিকের বোতলের দাম বাজারে ২০ টাকা। কেজিপ্রতি প্রায় ৩৫টি বোতল থাকে। কাচের বোতলের ক্ষেত্রে ১২ টাকা কেজি। কিন্তু, এখানে বোতল পিছু টাকা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, শহরের যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকছে না। পরিষ্কার রাখা সম্ভব হচ্ছে।’’ কিন্তু, আবর্জনা বলতে তো শুধু কাচ বা প্লাস্টিক নয়। অন্য জঞ্জালের ক্ষেত্রে কী হবে? ম্যাক্স জানালেন, “সেটা নিয়েও আমাদের ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এখনও বলার মতো কোনও অগ্রগতি হয়নি।”
এই যন্ত্রের যেমন একটা পরিচ্ছন্নতার জায়গা রয়েছে, তেমনই রয়েছে একটা ব্যবসায়িক দিকও। কাচ-প্লাস্টিকের বাতিল বোতল, ভাঙাচোরা লোহালক্কর, ই-বর্জ্যের বাজার দেশ জুড়েই আছে। এখনও শহর, মফস্সল, গ্রামের রাস্তায় কান পাতলে শোনা যায়— ‘লোহা ভাঙা, টিন ভাঙা, কাচ ভাঙা, প্লাস্টিকের ব্যাগ, পুরনো বোতল বিক্রি আছে...!’ ভ্রাম্যমান ক্রেতার ভাঙাচোরা সাইকেলে বা মাথার ঝুরিতে চাপানো হাজার কিসিমের মালপত্তর। গৃহস্থ বিক্রেতার কাছে সে সবই প্রায় আবর্জনা, জঞ্জাল। বেচে দিয়ে গৃহস্থ বাড়ির জঞ্জাল যেমন সাফ হয়, তেমন ঘরে কিছু পয়সাও আসে। আর যাঁরা এই জিনিসপত্র কিনিয়ে নিয়ে যান, নানা ভাবে এগুলোকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে ব্যবসা করেন।
আরও পড়ুন
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি: চতুর্থ বার দোষী সাব্যস্ত লালু
নগর সভ্যতার যন্ত্রনির্ভরতা বেড়ে চলাটাই তো নিয়ম। সেই নিয়মেই শহরে শহরে ঢুকছে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র। রিসাইক্লিং কোম্পানিগুলোর কাজকেও এই যন্ত্র আরও সহজ করে দেবে সন্দেহ নেই। একই সঙ্গে রাস্তাঘাটে যত্রতত্র এটা ওটা ফেলে দেওয়ার প্রবণতাও কমবে, হাতের কাছে এমন একটা যন্ত্র পেলে।
‘জঞ্জাল এটিএম’ থেকে সরে গাড়ির দিকে ফিরছি, দেখলাম এক যুগল সেখানে কোল্ড ড্রিঙ্কের ক্যান ফেলছেন। সত্যিই তো, এমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় ‘নোংরা’ ফেলার তো আর কোনও জায়গাই নেই। কাজেই ‘ম্যাক্স’ ভরসা। নগর পরিষ্কারও থাকল। নাগরিকের দুটো পয়সাও হল। আবার সেই বর্জ্য পুনর্ব্যবহার্যও হয়ে উঠল।
এ যেন এক ঢিলে অনেক পাখি!