মায়াবতী।
আস্থা ভোট হলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে। রাজস্থানের রাজনৈতিক সঙ্কটে নতুন মাত্রা যোগ করে কংগ্রেসে ‘যোগ দেওয়া’ দলীয় বিধায়কদের জন্য হুইপ জারি করল বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)। ওই রাজ্যে ৬ বিধায়ক রয়েছে বিএসপির।
রাজস্থানের অশোক গহলৌতের সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন জানিয়ে আসছিল বিএসপি। কিন্তু ২০১৯-এ ওই ৬ বিএসপি বিধায়কই কংগ্রেসে যোগ দেন। দলের সব বিধায়ককে ভাঙিয়ে নেওয়ায় কংগ্রেসের উপর সে সময় ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। তা নিয়ে ধিকিধিকি আগুন জ্বলছিলই। সেই ঘটনার এক বছরের মাথায় এ বার মরুরাজ্যে পরীক্ষার মুখে অশোক গহলৌতের সরকার। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কংগ্রেসকে দল ভাঙানোর ‘শিক্ষা’ দিতে আসরে নেমেছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিএসপি বিধায়করা যেন কংগ্রেসের পক্ষে না ভোট দেন। জারি হয়েছে হুইপও।
বিএসপি বিধায়ক রাজেন্দ্র গুড়া, যোগেন্দ্র সিংহ আওয়ানা, ওয়াজিব আলি, লখন সিংহ, সন্দীপ যাদব ও দীপচাঁদের জন্য হুইপ জারি করা হয় রবিবার। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সতীশচন্দ্র মিশ্র বলেন, ‘‘ছ’জন বিধায়ককে আলাদা ভাবে এবং এক সঙ্গে নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিএসপি একটি ন্যাশনাল পার্টি। জাতীয় স্তরে বিএসপি এবং কংগ্রেস মিশে না গেলে রাজ্যস্তরেও মিশে যাওয়া সম্ভব নয়। যদি ওই বিধায়করা হুইপ না মানেন তা হলে তাঁদের সদস্যপদ বাতিল করা হবে।’’
আরও পড়ুন: ফের অধিবেশন ডাকার প্রস্তাব গহলৌতের
গত বছর রাজস্থানে পুরভোটের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘মিশে যায়’ বিএসপি। এ নিয়ে কংগ্রেসকে ‘প্রতারক’ বলেও তোপ দাগেন মায়াবতী। বিষয়টি নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থও হন। কিন্তু বিষয়টি রাজস্থান বিধানসভার স্পিকারের এক্তিয়ারে বলে তাতে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এখন অশোক গহলৌতের সরকার আস্থা ভোটের মুখে পড়লে এবং তাঁর সরকারের পক্ষে ওই ছ’জন বিএসপি বিধায়ক সমর্থন জানালে নতুন জট তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ধারণা, এ নিয়ে এত দিন চুপ থাকলেও, এ বার ঝোপ বুঝেই কোপ বসানোর চেষ্টা করছেন মায়াবতী।
আরও পড়ুন: ‘করোনার শক্তি কিন্তু কমেনি’, সতর্কবার্তা মোদীর
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজস্থানের রাজনৈতিক চিত্রটা। ২০০ আসনের বিধানসভায় অশোক গহলৌতের ঝুলিতে রয়েছে ১০৩ বিধায়ক (কংগ্রেস ৮৮, বিটিপি ২, সিপিএম ২, আরএলডি ১ এবং নির্দল ১০)-এর সমর্থন। সেই সঙ্গে সচিন পাইলটের শিবির থেকে ৩ জন ফিরে আসবেন বলে গহলৌত শিবির আশা করছে। অন্য দিকে সচিনের শিবির তাঁদের কাছে ৩০ জন বিধায়ক রয়েছে বলে দাবি করলেও বাস্তবে মাত্র ১৯ জন রয়েছেন। বিজেপির নিজের বিধায়ক সংখ্যা ৭২। সঙ্গে ৩ জন লোকতান্ত্রিক পার্টির বিধায়ক। এমন পরিস্থিতিতে আস্থা ভোটে নিজের শক্তি প্রমাণে মরিয়া অশোক গহলৌত। রবিবারও রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা কলরাজ মিশ্রের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অধিবেশন ডাকার আর্জি জানান অশোক। কিন্তু তা-ও কার্যত নাকচ হয়ে গিয়েছে।