শিশুর দেহ পাক সেনার হাতে তুলে দিচ্ছে ভারতীয় সেনা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে নদীর জলে ভেসে এসেছিল ৭ বছরের এক শিশুর দেহ। আর সেই দেহ সংরক্ষণ করে রেখে পাকিস্তানের হাতে তুলে দিল ভারতীয় সেনা। তা-ও আবার মাইন বিছানো পাহাড়ি পথ পেরিয়ে!
উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে আচুরা গ্রামে একটি শিশুর দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। সেটি কিষাণগঙ্গার জলে ভেসে আসে। ফেসবুকদেখে জানা যায়,এটি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বাল্টিস্তানের অন্তর্গত একটি গ্রামের শিশুর দেহ। সোমবার থেকে সে নিখোঁজ ছিল। ফেসবুকেই তার পরিবারের সদস্যরা একটি ভিডিয়ো আপলোড করেছিলেন। সেখানে সন্তানকে খুঁজে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। শিশুটির নাম আবিদ শেখ।
বান্দিপোরার ডেপুটি কমিশনার শাভাজ মিশ্র সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁরা বিষয়টি জানতে পেরেই সেনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেনাকে অনুরোধ করেন, বিষয়টি দেখতে। যাতে তাঁরা সীমান্তের ওপারে পাক সেনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেহটি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে।গুরেজ থানার আধিকারিক তারিক আহমেদ জানিয়েছেন, বরফ দিয়ে দেহটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে তাতে পচন না ধরে।
আবিদের দেহটি পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হয় সীমান্ত পারের অফিসারদের সঙ্গে। বলা হয় বুধবারই গুরেজ সীমান্তে দেহ তুলে দেওয়া হবে পাকিস্তানের হাতে। কিন্তু পাকিস্তান জানায় তারা এই হস্তান্তর সরকারি নিয়ম মেনে করতে চায়। তাই তারা প্রস্তাব দেয়গুরেজ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে কুপওয়ারা জেলার টেটওয়ালেআবিদের দেহ হস্তান্তর হোক।
আরও পড়ুন : ১২৭ টাকায় চিকেন বিরিয়ানি! সঙ্গে চাপাটি, কাপ কেক...
আরও পড়ুন : সাংবাদিকের পা জড়িয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার আকুতি সারমেয়র
সেই মতো বুধবার দেহ নিয়ে সীমান্তের কাছে হাজির হন ভারতীয় আধিকারিক ও সেনার একটি দল। কিন্তু সেখানে পাকিস্তানের তরফে কাউকে দেখা যায়নি দেহ নেওয়ার জন্য। বাধ্য হয়ে ফিরে এসে দেহ গুরেজ হাসপাতালের রাখা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে পাকিস্তানি সেনা আবিদের দেহ নিতে রাজি হয়। সীমান্তে মাইন বিছানো রাস্তা পেরিয়ে দেহ পাকিস্তানি সেনার হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন এক সেনা আধিকারিক। দুপুর ১২টা ৩৯ মিনিটে পাকিস্তানি সেনা দেহ শনাক্ত করার পর সেটি গ্রহণ করে।
এই ঘটনার পর ভারতীয় সেনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ গুরেজের বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, সীমান্ত দুটো গ্রামকে আলাদা করে দিয়েছে। কিন্তু এই ঘটনা কোথাও গিয়ে তাদের আবার এক করে দিল।