Viral

রতন টাটার কাছ থেকে সরাসরি ফোন, সঙ্গে চাকরির প্রস্তাব!

মুম্বইয়ের বাসিন্দা শান্তনু নায়ডুর ক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটেছে। ২০১৪-য় রতন টাটার সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়। পাঁচ বছর বছর সম্প্রতি তাঁর সংস্থায় কাজ করার প্রস্তাব-সহ রতনের ফোন পেলেন শান্তনু।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

মুম্বই শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:২৭
Share:

রতন টাটার সঙ্গে শান্তনু। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।

যাঁর সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন, তাঁর কাছ থেকেই সরাসরি ফোন এল! সঙ্গে চাকরির প্রস্তাবও!

Advertisement

এমনটা সকলের জীবনে ঘটে না। কিন্তু মুম্বইয়ের বাসিন্দা শান্তনু নায়ডুর ক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটেছে। ২০১৪-য় রতন টাটার সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়। পাঁচ বছর পর সম্প্রতি তাঁর সংস্থায় কাজ করার প্রস্তাব-সহ রতন টাটার ফোন পেলেন শান্তনু।

২৭ বছরের শান্তনুর স্বপ্নের এই কাহিনি পোস্ট হয়েছে ফেসবুকে। ‘হিউম্যানস অব বম্বে’ পেজে তিনি জানিয়েছেন— সেটা ২০১৪। স্নাতক হওয়ার পর তিনি টাটা গ্রুপে কাজে যোগ দেন। এক দিন অফিস থেকে বাড়ি ফিরছেন। সেই সময় দেখেন, একটি কুকুর রাস্তায় মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সম্ভবত কোনও গাড়ির তলায় চাপা পড়েছিল কুকুরটি। বিষয়টি শান্তনুকে নাড়িয়ে দেয়।

Advertisement

এর পর তিনি ভাবতে থাকেন, পথকুকুরদের এ ভাবে মৃত্যুর হাত থেকে কী ভাবে বাঁচানো যায়। কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও করেন তিনি। এর পর তিনি শহরের একটা অংশের পথকুকুরদের গলায় একটা করে কলার পরিয়ে দিলেন। ওই কলারগুলিতে আলো পড়লেই তা ঝলমলে হয়ে ওঠে। ফলে রাতে গাড়ির আলো দূর থেকে পড়লেই কলারগুলো নজরে আসবে চালকের। সঙ্গে নজরে পড়বে কুকুরগুলোও।

আরও পড়ুন: নিয়ম ভেঙে লাইন পেরোলেই দৌড়ে যাবে চিন্নাপন্নু, ভাইরাল ভিডিয়ো

রতন টাটার সঙ্গে শান্তনু:

শান্তনুদের এই কাজ টাটা গ্রুপের নিউজ লেটারেও প্রকাশ পায়। এর পর প্রচুর মানুষ তাঁর কাছে কুকুরের জন্য এই কলার কিনতে চান। কিন্তু ওই চাহিদা মতো কলার সরবরাহ করার সামর্থ ছিল না শান্তনুদের। এ সবের মধ্যেই তাঁর বাবা এক দিন শান্তনুকে বিষয়টি রতন টাটাকে জানাতে বলেন। প্রথমে ইতস্তত করলেও শেষ পর্যন্ত রতনকে একটি চিঠি লিখে ফেলেন শান্তনু।

আরও পড়ুন: নিজের টি-শার্ট খুলে আগুনে ঝাঁপিয়ে কোয়ালাকে উদ্ধার করছেন মহিলা

রতন টাটার সঙ্গে প্রথমবার শান্তনু:

এর প্রায় দু’ মাস পর একটি চিঠি পান তিনি। সেই চিঠিতে রতন টাটার স্বাক্ষর। তার দিন কয়েক পর রতনের মুম্বইয়ের অফিসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন শান্তনু। রতন তাঁর কাজে যে ভীষণ আপ্লুত সে কথাও জানান। এর পর রতন তাঁর ব্যক্তিগত কুকুরগুলি দেখানোর জন্য শান্তনুকে নিয়ে যান। এই ভাবেই দু’জনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। টাটাদের তরফে শান্তনুর কাজের জন্য আর্থিক সাহায্যও করা হয়। এর পর বন্ধুরা মিলে মুম্বইয়ের পথকুকুরদের গলায় এই কলার পরানোর কাজ জোর কদমে শুরু হয়— জানিয়েছেন শান্তনু।

হিউম্যানস অব বম্বের পোস্ট:

তার পর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। টাটা গ্রুপের চাকরি ছেড়ে তিনি বিদেশে স্নাতকোত্তর পড়তে যান। যাওয়ার আগে রতন টাটাকে তিনি জানান, ফের এই সংস্থায় কাজ করতে চান। ফেসবুকের ওই পোস্টে শান্তনু জানিয়েছেন, তিনি বিদেশ থেকে ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই একটি ফোন পান তিনি। উল্টো দিক থেকে বলা হয়, “আমার অফিসে প্রচুর কাজ রয়েছে। একজন সহকারী প্রয়োজন। আপনি কি আমার সহকারী হিসাবে কাজ করবেন?” ফোন পেয়ে শান্তনু কয়েক মুহূর্ত কোনও কথা বলতে পারেননি। কারণ ফোনের উল্টো দিকে যিনি ছিলেন, তাঁর নাম রতন টাটা। নিজের সহকারীর খোঁজে শান্তনুকে নিজেই ফোন করেছেন! কী বলবেন প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না শান্তনু। পর মুহূর্তেই তিনি ‘হ্যাঁ’ বলেন। গত ১৮ মাস ধরে তিনি রতনের সঙ্গেই কাজ করছেন।

‘হিউম্যানস অব বম্বে’ পেজে শান্তনুকে নিয়ে এই পোস্টটি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ২০ নভেম্বর পোস্ট হওয়া এই কাহিনি এখনও পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি লাইক পেয়েছে, সঙ্গে প্রশংসার বন্যা।

বন্ধুদের সঙ্গে শান্তনু:

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement