মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় নাক গলাতে চাননি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি নিগ্রহের তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবীরা। সেই শুনানিতে হাজির হয়ে বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ-সহ একাধিক জায়গায় ট্রেনে ও রেল স্টেশনে আগুন লাগানোর প্রসঙ্গ তুলে আনলেন। অশ্বিনীর দাবি, এই হিংসার ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে, তার জন্য সিবিআই ও এনআইএ-কে দিয়ে তদন্ত করানো হোক।
প্রধান বিচারপতি শরদ বোবডে অবশ্য বিজেপি নেতার আর্জিতে কান দেননি। তাঁর স্পষ্ট যুক্তি, ‘‘আমরা নিম্ন আদালত নই। গোটা দেশে কোথায় কী হচ্ছে, তার সব বিষয় আমাদের বিচারাধীন হতে পারে না। পরিস্থিতি, তথ্য আলাদা রকম হতে পারে।’’
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ আজ যেমন মুর্শিদাবাদের ঘটনায় নাক গলাতে চাননি, তেমনই জামিয়া বা আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি হিংসার ঘটনায় কোনও তদন্তের নির্দেশ দিতেও রাজি হয়নি। আবেদনকারী প্রবীণ আইনজীবীদের সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা নিশ্চিত, যথাযথ তদন্ত করা হবে।’’ ইন্দিরা জয়সিংহ, কলিন গঞ্জালভেসের মতো প্রবীণ আইনজীবীদের আর্জি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিক। কিন্তু প্রধান বিচারপতির যুক্তি, ‘‘আমাদের মনে হয় না, একটি কমিটি তৈরি করা সঠিক হবে। কারণ একটা বিরাট জায়গা জুড়ে ঘটনা ঘটেছে। আমরা বলছি না, বিষয়টা গুরুতর নয়। আমরা বলছি, হাইকোর্ট আগে কী ঘটেছিল, তা ঠিক করুক। হাইকোর্ট কেন্দ্র, রাজ্যের বক্তব্য শুনে নির্দেশ জারি করতে পারে। সেই কমিটিতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা থাকতে পারেন।’’
আরও পড়ুন: মহুয়ার মামলায় নেট-নজরদারি থেকে পিছু হটল আধারও
ইন্দিরার দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট অন্তত নির্দেশ দিক, কোনও পড়ুয়াদের যেন গ্রেফতার করা না হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, ভাঙচুর করা হলে আর কী পদক্ষেপের পরামর্শ দিচ্ছেন? প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা আগে থেকে বিচার করতে বসতে চাই না, কেউ আইন ভাঙতে চাইলে পুলিশ কী করবে। কেউ পাথর ছুড়ছে, কেউ বাসে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। আমরা কী ভাবে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে বাধা দেব?’’ ইন্দিরা অভিযোগ তোলেন, একজন আইনের শিক্ষার্থী তাঁর চোখ হারিয়েছেন, অনেকের হাত, পা খোয়া গিয়েছে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা একে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য বলে খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে দাবি করেন, কোনও পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়নি। মেহতা জানান, আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অনুরোধেই পুলিশ ক্যাম্পাসে গিয়েছিল।