হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুর। —ফাইল চিত্র।
শুক্রবার গভীর রাতে ফের তুমুল সংঘর্ষ হল মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে। প্রাণ গেল এক কুকি গ্রামরক্ষীর। একাধিক মেইতেই নিখোঁজ।
স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়, শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ বিষ্ণুপুর জেলার সীমানা পার করে মেইতেইদের একটি বাহিনী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে জ়োউপি গ্রামে চড়াও হয়। সতর্ক গ্রামরক্ষীরা রুখে দাঁড়ান। দুই পক্ষে গুলির লড়াইতে খুপমিংথাং নামে এক গ্রামরক্ষী মারা যান। কুকিদের বাধা দানে শেষ পর্যন্ত গ্রাম পোড়াতে না পেরেই পিছু হটে মেইতেইরা। কয়েক জন মেইতেই হানাদার নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। নিখোঁজ সঙ্গীদের খুঁজতে ফের আরাম্বাই টেঙ্গল ও মেইতেই লিপুনের বিরাট বাহিনী জড়ো হয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে মেইতেই কমান্ডোরা। কুকিদের তরফে চূড়াচাঁদপুর জেলায় জরুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের একটি ভাষণের ভিডিয়ো প্রকাশ করে কুকিদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ জানায় বীরেন ভাষণে স্পষ্ট বলছেন, তিনি শুধুমাত্র মেইতেই স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন, লড়ছেন জনজাতিদের বিরুদ্ধে। আইটিএলএফ বলে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর মতো সাংবিধানিক পদে থাকা কারও দায়িত্ব রাজ্যের সকলের সমান ভাবে দেখভাল করা, রক্ষা করা। কিন্তু বীরেন সরাসরি একটি গোষ্ঠীকে রক্ষা ও অন্য গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে সচেষ্ট। এমন লোককে অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো উচিত।’’
বীরেনকে ভিডিয়োতে বলতে শোনা যায়, “আমি ১০ বছর আগেই জানতাম, এই সংঘর্ষ হবেই। তাই রাজ্য ও মেইতেইদের বাঁচাতেই আমি ভোট রাজনীতিতে নামি।’’ সংঘর্ষকে যুদ্ধের নাম দিয়ে বীরেন বলেন, ‘‘সামাজিক মাধ্যমে চিৎকার করে নয়, ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে যুদ্ধে জিততে হবে।”
আইটিএলএফ বলে, ‘‘এক জন মুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষকে ‘যুদ্ধ’ বলে ব্যাখ্যা করছেন। নিজের রাজ্যবাসীর বিরুদ্ধে ঠান্ডা মাথায় যুদ্ধজয়ের কথা প্রকাশ্যে বলছেন। স্বাধীনতার পরে দেশে এমন ঘটনা নজিরবিহীন! তাই পৃথক প্রশাসনই জনজাতিদের বাঁচার একমাত্র উপায়।’’
পাশাপাশি, মণিপুর সরকার তিন কুকি-জ়ো বিধায়ককে তাঁদের সরকারি পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। সেখানে নাগা ও মেইতেই বিধায়কদের নিযুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপির দুই মন্ত্রী-সহ সাত কুকি বিধায়ক ও অন্য দলের তিন কুকি বিধায়ক যৌথ ভাবে পৃথক কুকি প্রশাসনিক এলাকার দাবিতে সরব হয়েছেন।