বিজয় মাল্যর প্রত্যর্পণ হবে ব্রিটেনে বিশেষ আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার পর। —ফাইল চিত্র
বিজয় মাল্যর সামনে ব্রিটেনের সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ। এ বার প্রত্যর্পণের অপেক্ষা। কিন্তু সেটা কত দিনে হবে? এই প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্টে সোমবার কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্রিটেনে কিছু ‘কনফিডেন্সিয়াল’ প্রক্রিয়া শেষ হলেই দেশে ফেরানো সম্ভব হবে লিকার ব্যারন বিজয় মাল্যকে। যদিও মাল্যর আইনজীবীর দাবি, ওই গোপন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। আগামী ২ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে বিচারপতি ইউ ইউ ললিত ও বিচারপতি অশোক ভূষণের ডিভিশন বেঞ্চ।
বিজয় মাল্যকে তাঁর সমস্ত সম্পত্তির হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। অন্য একটি মামলায় ২০১৭ সালের ৯ মে কর্নাটক হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, তাঁর সম্পত্তি অন্য কাউকে হস্তান্তর বা দান করতে পারবেন না মাল্য। কিন্তু তার পরেও দেখা গিয়েছে, তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা পড়া ৪ কোটি টাকা তিনি সন্তানদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন। এই দুই ক্ষেত্রেই আদালত অবমাননায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। সেই সংক্রান্ত মামলায় কেন্দ্রকে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, বিজয় মাল্যর প্রত্যর্পণের আর্জি ব্রিটেনে পাঠানো হয়েছিল ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। পরের বছর ডিসেম্বরে ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণের নির্দেশ দেন। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে লন্ডন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মাল্য। কিন্তু সেই আবেদনও খারিজ হয়ে যায় ২০২০ সালের ২০ এপ্রিল। এর পর হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করে ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অনুমতি চান মাল্য। কিন্তু সেই আর্জিও খারিজ হয়ে গিয়েছে এ বছরের ১৪ মে। ফলে ব্রিটেনের আইনে আর কোনও পথ খোলা নেই মাল্যর সামনে। প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ হওয়ার পর ২৮ দিনের মধ্যে মাল্যকে ভারতীয় আইন ব্যবস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: আততায়ী দাঁড়িয়ে ছিল মণীশের গা ঘেঁষেই, সামনে এল হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ
আরও পড়ুন: থরস কাণ্ডে আদালতের নজরদারিতে তদন্তের দাবি, মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
তা হলে প্রত্যর্পণে দেরি কেন? শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র জানিয়েছে, ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি অতিরিক্ত আইনি জটিলতার কথা জানানো হয়েছে নয়াদিল্লিকে। তার পরেই প্রত্যর্পণের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে। কেন্দ্রের দাবি, লন্ডন জানিয়েছে, ‘‘এটা প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার বাইরে, কিন্তু ব্রিটেনের আইন অনুযায়ী এটা করতেই হবে। সেটা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যর্পণ সম্ভব নয়।’’ ভারতীয় হাই কমিশনকে লন্ডনের তরফে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়া গোপনীয়, অর্থাৎ প্রকাশ করা যাবে না। তখন মাল্যর আইনজীবীর কাছে বিচারপতিরা জানতে চান, তিনি এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল কি না। মাল্যর আইনজীবী জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। এর পর আগামী ২ নভেম্বর পরবর্তী শুনানিতে ওই গোপন প্রক্রিয়ার বিষয়ে মাল্যর আইনজীবীর মতামত জানানোর নির্দেশ দেয় বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ।