Monsoon Session of Parliament

বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনার ‘সুযোগ পাবে’, চার বছর আগেই সময় জানিয়ে দিয়েছিলেন মোদী!

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংসদে বিরোধীদের মোদী বলেন, “প্রস্তুত থাকুন, আপনারা আবারও ২০২৩ সালে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সুযোগ পাবেন।” ঘটনাচক্রে, এ বছরেই অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন বিরোধীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ ১৩:৪৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

মণিপুরের ঘটনা নিয়ে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে বুধবারই সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধী দলগুলি। এই আবহেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি পুরনো বক্তব্য নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জানাচ্ছেন যে, ২০২৩ সালে আবারও অনাস্থা প্রস্তাব আনার ‘সুযোগ পাবেন’ বিরোধীরা। ভিডিয়োটি টুইট করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। তবে এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ঘটনাচক্রে ২০২৩ সালেই অনাস্থা প্রস্তাব পেশ হয়েছে সংসদে। আলোচনার জন্য তা গ্রহণও করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তবে কবে এই বিষয়ে আলোচনা হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে সংসদের বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক চলছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, সেই সময় জবাবি বক্তব্য রাখতে উঠে বিরোধী বেঞ্চের উদ্দেশে মোদী বলেছিলেন, “আমি (আপনাদের) শুভেচ্ছা জানাতে চাই। প্রস্তুত থাকুন, কারণ আপনারা আবারও ২০২৩ সালে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সুযোগ পাবেন।” সেই দিনের বক্তব্যে কংগ্রেসের নাম না করেই মোদী বলেছিলেন, “অহঙ্কারের কারণে আপনারা ৪০০ (লোকসভার সাংসদ) থেকে ৪০-এ এসে পৌঁছেছেন।” এই ভিডিয়োটি তুলে ধরেই বিজেপির তরফে মোদীর ‘নির্ভুল অনুমান’-এর প্রশংসা করা হচ্ছে। তবে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, চার বছর আগে সংসদে ওই বক্তব্য রেখে মোদী বিরোধীদের উদ্দেশে এই বার্তাই দিতে চেয়েছিলেন যে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। বিরোধীরা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আবার অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন তিনি।

২০১৮ সালে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। তাদের আনা প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছিল অন্য বিজেপি-বিরোধী দলগুলি। বিজেপির সংখ্যাধিক্যের জোরে বিরোধীদের আনা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। বুধবার বিরোধী দলগুলির জোট ‘ইন্ডিয়া’র হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। বিআরএসের হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন সাংসদ নামা নাগেশ্বর রাও। উল্লেখ্য যে, তেলঙ্গানার শাসকদল বিআরএস ২৬টি বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’য় অংশ নেয়নি। তবে সাম্প্রতিক অতীতে বহু বার বিজেপির বিরোধিতায় সরব হতে দেখা গিয়েছে তাদের।

Advertisement

বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদী সরকারের কোনও সঙ্কট তৈরি হবে না। কারণ খাতায়কলমে ৩৩২ জন সাংসদের সমর্থন রয়েছে শাসক পক্ষের দিকে। বিরোধী দলগুলির অবশ্য বক্তব্য, মণিপুর নিয়ে সরকারের ‘নীরবতা’ ভাঙাতেই তারা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। এই প্রসঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক শিবসেনার তরফে বলা হয়েছে, মণিপুর নিয়ে বক্তব্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী যাতে সংসদে আসেন, সেই কারণেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বিজেপির উপর মানুষের আস্থা রয়েছে। বিরোধীরা আগেও অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। কিন্তু মানুষ ওদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে।”

গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর। সম্প্রতি মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে সমাজমাধ্যমে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। এই ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে তেতে রয়েছে জাতীয় রাজনীতি। ৭৮ দিন মৌনী থাকার পর মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের লজ্জা।’’ তবে তাতে ক্ষোভের প্রশমন যে ঘটেনি, তা বিরোধীদের বিক্ষোভেই স্পষ্ট। মণিপুরের ঘটনায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই অচল সংসদের বাদল অধিবেশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement