আফরাজুল খুনের ভিডিও-য় কিছু অংশ
রাজস্থানে কুপিয়ে মারা হয়েছিল মালদহের আফরাজুল খানকে। সেই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেটে, সোশ্যাল মিডিয়ায়। আজ সুপ্রিম কোর্টে সেই ভিডিও দেখে শিউরে উঠলেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। বললেন, ‘এ তো ভয়ঙ্কর’।
এই ঘটনায় সুবিচার চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আফরাজুলের স্ত্রী গুলবাহার বিবি। আজ প্রধান বিচারপতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ ও ইন্টারনেট থেকে ভিডিও-টি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তার জন্য মামলার আবেদনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গুলবাহারের করা মামলায় বেশ কিছু রাজনৈতিক অভিযোগ ছিল। সেগুলিও মামলার পিটিশন থেকে সরাতে বলা হয়েছে।
বছর কুড়ি আগে শ্রমিকের কাজ নিয়ে রাজস্থানে যান আফরাজুল। ডিসেম্বর মাসে রাজসমন্দে এক নির্জন এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁর গায়ে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়ায় যায় সেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও। ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, লাল জামা পড়া এক ব্যক্তি নির্মম ভাবে কুপিয়ে, জ্যান্ত পুড়িয়ে খুন করছে তাঁকে।
আজ সুপ্রিম কোর্টে ইন্দিরা জয়সিংহ ভিডিওটি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সামনে পেশ করেন। প্রথমে এই ঘটনায় ‘লাভ জেহাদ’-এর তত্ত্ব খাড়া করার চেষ্টা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, খুনের পিছনে রয়েছে ত্রিকোণ প্রেম। কিন্তু বছর পঞ্চাশের আফরাজুলের পরিবার সেই তত্ত্ব মানতে চাননি।
ভিডিও-তে দেখা যায়, হত্যাকারী বলছে, ‘এ দেশে জেহাদের এই শাস্তি।’ কংগ্রেস, বাম নেতাদের অভিযোগ, রাজস্থান ভোটের আগে মেরুকরণের রাজনীতি করতেই সংখ্যালঘুদের জেহাদি বলে তকমা দেওয়া হচ্ছে। মূল অভিযুক্ত শম্ভুলালকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু যে ভাবে ভিডিও ছড়ানো হয়েছে, তাতে এর পিছনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। তাই এর বৃহত্তর তদন্ত প্রয়োজন। এই হত্যার প্রতিবাদে সংসদে গাঁধী মূর্তির সামনে ধর্নাও দিয়েছিল তৃণমূল। তবে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৯ জানুয়ারি।