আহত সেই ব্যক্তি। হাসপাতালে।
হাসপাতালের স্ট্রেচারে শুয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন এক যুবক। রক্তে ভেসে যাচ্ছে শরীর। আর তাঁর মাথার তলায় বালিশের মতো রাখা তাঁরই কাটা পা!
ঝাঁসি মেডিক্যাল কলেজের এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যেতেই অস্বস্তিতে পড়ছে হাসপাতাল ও প্রশাসন। তড়িঘড়ি বরখাস্ত করা হয়েছে দুই চিকিৎসক ও দুই নার্সকে।
শনিবার একটি দুর্ঘটনায় পা কাটা পড়েছিল ২৮ বছর বয়সি ঘনশ্যাম নামে এক যুবকের। তিনি একটি স্কুলবাসের সাফাইকর্মী। শনিবার পড়ুয়াদের নিয়ে বাস যখন স্কুলের দিকে যাচ্ছিল, মাঝপথে দুর্ঘটনা ঘটে। উল্টো দিক থেকে বিপজ্জনক ভাবে আসা একটি ট্রাক্টর-ট্রলির সঙ্গে ধাক্কা এড়াতে গিয়ে উল্টে যায় বাসটি। বেশ কিছু বাচ্চা জখম হয়। একটি পা কাটা পড়ে ঘনশ্যামের। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ঝাঁসির সরকারি হাসপাতাল, মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, হাসপাতালের কর্মীরা তাঁর মাথার তলায় তাঁরই কাটা পা-টি রেখেছিল।
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা সাধনা কৌশিক জানান, চার সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। গাফিলতি প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধনা আরও বলেন, ‘‘যত দূর জানতে পেরেছি, রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ওঁর মাথাটা একটু উঁচু করে রাখতে হবে। শোনা যাচ্ছে, তাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী রোগীর কাটা পা-টিই তাঁর মাথার তলায় রেখে দেয়। আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি। কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে যদি হাসপাতালের কর্মীদের দোষ প্রমাণ হয়।’’
ঘটনা জানাজানি হতেই গাফিলতির অভিযোগে দুই চিকিৎসক ও দুই নার্সকে বরখাস্ত করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা মন্ত্রী আশুতোষ ট্যান্ডন। লখনউ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে বুন্দেলখণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ওই মেডিক্যাল কলেজের শাস্তির মুখে পড়া দুই চিকিৎসক হলেন অলোক অগ্রবাল (অস্থি বিশেষজ্ঞ) ও ম হেন্দ্রপাল সিংহ (ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার) এবং দুই নার্স দীপা নারাং ও শশী শ্রীবাস্তব। অস্থি বিভাগের আর এক চিকিৎসক প্রবীণ সারাওগির বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানানো হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ। উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মাও জানিয়েছেন, সব তথ্যপ্রমাণ হাতে এলেই সরকারের পক্ষ থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।