উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র।
গণতন্ত্র নিয়ে বক্তৃতা করছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। আচমকাই তাঁর কথায় উঠে এল ইডি-সিবিআই প্রসঙ্গ। কেন্দ্রীয় এজেন্সি বা তদন্তকারী সংস্থার প্রসঙ্গ টেনে একদা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল বললেন, ‘‘যদি এজেন্সি কাউকে ডেকে পাঠায়, তবে গণতন্ত্রের নিয়ম মেনে সেই ডাকে সাড়া দেওয়াই তো কর্তব্য! এ নিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন হবে কেন? আইনকে তো নিজের কাজ করতে দিতে হবে।’’
রবিবার, দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন দেশের উপরাষ্ট্রপতি। সেখানে গণতন্ত্র নিয়ে বক্তৃতা করেন তিনি। তবে সেই বক্তৃতায় দেশের তরুণ প্রজন্মকে আইনের মর্যাদা দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। ধনখড় বলেন, ‘‘আইন সবার ক্ষেত্রে সমান। সে তুমি যে পরিবার থেকেই হও, যতবড় পদাধিকারীই হও না কেন, আইনের কাছে জবাব দিতে হবে।’’ এর পরেই ধনখড়ের সংযোজন, ‘‘ভারতে এখন আইন নিজের পথে চলছে। আর তার ফলে এখন আইন লঙ্ঘনকারীদের অবাধ গতি রুদ্ধ হয়েছে। যাঁরা এর জন্য চাপ অনুভব করছেন, তাঁরা এখন রাস্তায় নামছে। কিন্তু তাঁদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে কেন, সেটাই ভেবে দেখার মতো বিষয়।’’
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বক্তৃতায় ধনখড় ঠিক কাকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেছেন, তা স্পষ্ট নয়। তিনি কারও নাম না করেই বলেছেন, ‘‘যদি কেউ কোনও এজেন্সির থেকে নোটিস পান, তবে গণতন্ত্রের নিয়ম মেনে সেই ডাকে সাড়া দেওয়াটাই তো উচিত কাজ। হঠাৎ রাস্তায় নামতে যাবেন কেন?’’ উল্লেখ্য, দেশের উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে ধনখড় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন। সেই সময় রাজ্যে নানা রকম অভিযোগের তদন্তে এসেছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি। রাজ্যের বহু নেতা মন্ত্রীকে তলব করেছে তারা। যদিও ধনখড় কোনও রাজ্য, ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের নাম করেননি।
রবিবারের ওই বক্তৃতায় সংসদের অচলাবস্থার প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন ধনখড়। তিনি বলেন, ‘‘আলোচনা পর্যালোচনার মাধ্যমেই জনগণের মঙ্গল করা সম্ভব। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অচলাবস্থা তৈরি করে, কাজে বাধা সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের মন্দিরকে কলুষিত করার চেষ্টা হচ্ছে। যে ভাবে দিনের পর দিন এই দু’টি বিষয়কে সুকৌশলে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করে গণতন্ত্রের মন্দিরকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে, তা দেখে আমি মর্মাহত।’’ ধনখড় একই সঙ্গে নিজের মতামত জানিয়ে বলেছেন, ‘‘কিছু শক্তি ক্ষতি করার মানসিকতা থেকেই উন্নয়নের এই পবিত্রভূমিকে কলঙ্কিত করতে চাইছে। আমি এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে বলব এই ধরনের শক্তিকে তোমাদেরই সমূলে বিনাশ করতে হবে। আর আমি জানি তোমরা সেটা পারবে।’’
সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে কিছু দিন আগেই। বিরোধীদের বিক্ষোভে বেশ কয়েকদিন অধিবেশন মুলতবিও হয়েছে সংসদের দুই কক্ষেই। তবে ধনখড় এ ক্ষেত্রেও ঠিক কোন বিষয়ে কথা বলছেন, তা স্পষ্ট করে না জানিয়ে সমস্যার কথা হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়েছেন।