(বাঁ দিক থেকে) স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী, স্বামী ভারতী তীর্থ মহেশ্বরী, স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী এবং স্বামী সদানন্দ স্বরস্বতী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন দেশের চার শঙ্করাচার্যের মধ্যে অন্তত দু’জন। শনিবার এই দাবি করেছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর আন্তর্জাতিক কার্যনির্বাহী সভাপতি অলোক কুমার। তিনি বলেন, ‘‘দ্বারকার সারদাপীঠের শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী রামমন্দিরের উদ্বোধন এবং রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের আয়োজনে খুশি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় আসবেন।’’
কর্নাটকের শ্রীঙ্গেরীর শঙ্করাচার্য স্বামী ভারতী তীর্থ মহেশ্বরীর তরফেও ইতিবাচক বার্তা এসেছে বলে জানিয়ে অলোকের দাবি, অযোধ্যার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়ে যে অসত্য সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তিনি (শ্রীঙ্গেরীর শঙ্করাচার্য) ক্ষুব্ধ। শনিবার, শ্রীঙ্গেরী পীঠের তরফে সমাজমাধ্যমে একটি বার্তাতেও অলোকের দাবির সমর্থন মিলেছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘রামমন্দির উদ্বোধনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় রীতি লঙ্ঘন নিয়ে স্বামী ভারতী তীর্থ মহেশ্বরী ক্ষুব্ধ বলে সংবাদমাধ্যমের একাংশ যে খবর প্রচার করেছে, তা ভিত্তিহীন।’’
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়াতেই ওড়িশায় পুরী গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জানিয়েছিলেন, তিনি অযোধ্যার অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের জ্যোতির্মঠপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী জানান, দেশের চার পীঠের চার শঙ্করাচার্যই ঠিক করেছেন ওই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার। হরিদ্বারে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় সনাতন ধর্মের লঙ্ঘন হতে চলেছে। চার শঙ্করাচার্যের কেউই তাই সেখানে উপস্থিত থাকবেন না।’’
কর্নাটকের শ্রীঙ্গেরীর শঙ্করাচার্য স্বামী ভারতী তীর্থ মহেশ্বরী এবং গুজরাতের দ্বারকার সারদাপীঠের শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতীও রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না বলে দাবি করেছিলেন স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। অভিযোগ করেছিলেন, রামমন্দিরের নির্মাণ এখনও শেষ হয়নি। তাই সেখানে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হিন্দু ধর্মের রীতিবিরোধী। সেই সঙ্গে তিনি জানান, অযোধ্যার রামমন্দির কোনও স্বীকৃত পীঠ নয়।
পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ শনিবার গঙ্গাসাগর মেলায় যোগ দিতে এসে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ২২ তারিখ অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনে যাচ্ছেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা রাজধর্ম পালন করেন সংবিধানকে মান্যতা দিয়ে তাঁদের উচিত রাজধর্ম পালন করা। যাঁরা ধর্মশাস্ত্র পালন করেন তাঁদের ধর্মশাস্ত্র পালন করাই উচিত। রাজধর্মের মানুষ কখনও ধর্মশাস্ত্রের আচার-আচরণ পালন করতে গেলে কিছুটা হলেও অসুবিধা হয়। ধর্মকর্ম করা মানুষের ধর্মকর্মই পালন করা উচিত।’’