Naseeruddin Shah

দাভোলকরের লড়াই ইরানেও: নাসিরুদ্দিন

প্রদর্শনীটির সূচনা অনুষ্ঠানে ২০১৩-র ২০ অগস্ট পুণেয় গেরুয়া মৌলবাদী দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হওয়া নরেন্দ্র দাভোলকরের  স্ত্রী শায়লা এবং বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৫২
Share:

নরেন্দ্র দাভোলকর স্মরণে একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধনে অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। শুক্রবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।

বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ মনে করেন, হত্যা করে নরেন্দ্র দাভোলকরদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার যে প্রয়াস ভারতে হয়েছিল, বিশ্বের নানা দেশে আজও তা চলছে। মুম্বইয়ে শুক্রবার দাভোলকর স্মরণে একটি শিল্প প্রদর্শনীর সূচনা করে নাসিরুদ্দিন বলেন, “পাকিস্তানে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিবিদ সালমন তাসির, মানবাধিকার কর্মী সাবিন মেহমুদকে খুন করা হয়েছে। ইরানে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে হিজাবের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন হাজার হাজার মেয়ে। কিন্তু দাভোলকরকে হত্যার পরেও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে খামতি পড়েনি। আমরা ভাগ্যবান যে দাভোলকরের সময়ে আমরা ছিলাম।”

Advertisement

মানবাধিকার সংগঠন ‘ফ্রেন্ডস অব দাভোলকর’-এর উদ্যোগে একটি আর্ট স্কুলের শিল্পীদের আঁকা ৩০টি ছবির এই প্রদর্শনীটির সূচনা অনুষ্ঠানে ২০১৩-র ২০ অগস্ট পুণেয় গেরুয়া মৌলবাদী দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হওয়া নরেন্দ্র দাভোলকরের স্ত্রী শায়লা এবং বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট মানুষ উপস্থিত ছিলেন। নাসিরউদ্দিন উল্লেখ করেন, দাভোলকরের পরেও বিশিষ্ট কন্নড় লেখক এম এম কালবুর্গী, কমিউনিস্ট নেতা গোবিন্দ পানেসর, সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ খুন হন। তদন্তকারীরা দেখেন, একটিই দুষ্কৃতী গোষ্ঠী এঁদের হত্যা করেছে। নাসিরুদ্দিন বলেন, “এতগুলো হত্যাকাণ্ডেও প্রতিবাদ কিন্তু থামেনি। খুন করে যুক্তিবাদী আন্দোলনের মুখ দাভোলকরকে মুছে ফেলা যায় না। বরং যত দিন যাচ্ছে, গভীরতর হচ্ছে তাঁর পদচিহ্ন।”

নাসিরুদ্দিন স্বীকার করেন, দাভোলকর যত দিন বেঁচে ছিলেন তিনি তাঁর কাজের সঙ্গে খুব একটা পরিচিত ছিলেন না। তাঁকে হত্যা করার পরে দাভোলকর সম্পর্কে জেনে বিস্মিত হন তিনি। সত্য ও ন্যায়ের প্রতি দাভোলকরের অবিচলতা তাঁকে মুগ্ধ করে। শাহ বলেন, “কুসংস্কারের বিরুদ্ধে মুখ খুলে মৌলবাদীদের রোষে পড়েন দাভোলকর। মৌলবাদীদের সঙ্গে কুসংস্কার যেন অবিচ্ছেদ্য। মনে পড়ে আমাদের ছোটবেলায় এক মৌলবি ধর্মের নামে নানা অর্থহীন কথা আমাদের শেখাতে চাইতেন— যেমন পৃথিবী সূর্যের চার দিকে ঘোরে এটা ভ্রান্ত ইত্যাদি।” নাসিরউদ্দিন মন্তব্য করেন, অপযুক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই সব লোক যেমন একবগ্গা, ঠিক একই মনোভাব নিয়ে লড়াই করতে হবে যুক্তিবাদীদেরও।

Advertisement

অনুষ্ঠানে দাভোলকরের স্মৃতিচারণ করে তাঁর স্ত্রী শায়লা দাভোলকর বলেন, “বেঁচে থাকতে অনেক বার খুনের হুমকি পেয়েছেন নরেন্দ্র। কিন্তু ভয় পেয়ে যুক্তিবাদের পথ থেকে কখনও পিছিয়ে আসেননি তিনি।” দাভোলকর পরিবারের আইনজীবী আভাব নেভাগি অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়াকে নানা ভাবে বিলম্বিত করা হচ্ছে। পুলিশ এক বার আদালতে জানায়, যে বুলেটে দাভোলকর নিহত হন তদন্তের স্বার্থে সেটিকে লন্ডনে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া দরকার। আদালত অনুমতি দিলেও পুলিশ তা নিয়ে আর এগোয়নি। বিচারক তা নিয়ে প্রশ্ন করায় পুলিশ জানাল, দু’দেশের মধ্যে তেমন কোনও চুক্তি না-থাকায় ওই বুলেট লন্ডনে পাঠানোই সম্ভব নয়। নেভাগি বলেন— মাঝখান থেকে কেটে গেল ১০টা মাস! এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদের মধ্যে ২ জন ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement