প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ তুললেন, ‘শহুরে নকশাল’-দের কংগ্রেস চালানোর ঠিকা দেওয়া হয়েছে। আর ভোটমুখী ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুর থেকে রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর ‘রিমোট কন্ট্রোল’ আদানির হাতে। সেই ‘রিমোট কন্ট্রোল’-এ চাপ পড়লেই আদানির নামে বিমানবন্দর, রেল, বন্দরের বরাত পাশ হয়ে যায়।
মোদী মধ্যপ্রদেশ থেকে অভিযোগ করলেন, কংগ্রেস মহিলা সংরক্ষণের মধ্যে ওবিসি সংরক্ষণের দাবি তুলে মহিলাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চাইছে। আর রাহুল ছত্তীসগঢ় থেকে ফের জাতগণনার দাবি তুলে বললেন, দেশে ওবিসি-র সংখ্যা কত, তার উত্তর জাতগণনাই দেবে। জাতগণনা হল সমাজের এক্স-রে। জনসংখ্যায় কার কত ভাগ জানা গেলে সেই অনুযায়ী অংশিদারি দেওয়া যাবে।
মোদী প্রথমে রাজস্থান, তারপরে মধ্যপ্রদেশে অভিযোগ তুললেন, ‘ঘমন্ডিয়া’ (অহঙ্কারী) বিরোধী জোট সনাতন ধর্মকে মুছে দিতে চাইছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে মধ্যপ্রদেশকে ফের ‘বিমারু’ বা রুগ্ন রাজ্যের তালিকায় ঠেলে দেবে। আর রাহুল প্রতিশ্রুতি দিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলেই জাতগণনা করাবে।
ভোটমুখী রাজ্যে প্রচার করলেও আদতে লোকসভা নির্বাচনের মহড়ায় মোদী কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন আর রাহুলের নিশানায় থাকলেন মোদী-আদানি। বিলাসপুরে রাহুলের জনসভায় ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর নেতারাই হাজির ছিলেন। জয়পুরে মোদীর জনসভায় রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে হাজির থাকলেও বক্তৃতার সুযোগ পাননি। তা রাজস্থানে কংগ্রেসের মতো বিজেপির অন্দরমহলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করানোর পরে মোদী আজ মধ্যপ্রদেশে গিয়ে তার প্রচার করেছেন। সংসদে তিনি রাষ্ট্রনেতার সুরে বিরোধীদের মহিলা সংরক্ষণ বিলে পাশ করানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে তিনি বলেছেন, কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বাধ্য হয়ে বিলে সমর্থন জানিয়েছে। কারণ? মোদী নিজেই বলেছেন, ‘‘মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়।’’
এখানেই শেষ নয়। মোদী আজ নিজেই ‘ব্র্যান্ড মোদী’-র প্রচারে বলেছেন, মোদীর মেজাজ, পরিশ্রম, মিশন সকলের থেকে আলাদা। মোদীর কাছে দেশ ও দেশের মানুষ সকলের উপরে। রাহুল পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আদানির কী সম্পর্ক? সংসদে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, কেন আদানিকে বন্দর, প্রতিরক্ষা, বিমানবন্দরে
ফায়দা পাইয়ে দেওয়া হয়? কেন আদানিদের জন্য তিন কৃষি আইন পাশ হয়? এই প্রশ্ন করতেই সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গেল।’’
বিলাসপুরে জনসভায় পরে রাহুল গান্ধী আজ সাধারণ ট্রেনে চেপে রায়পুরে ফিরেছেন। ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আর মোদী রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে প্রচার সেরে বিজেপির দিল্লির সদর দফতরের সামনের পার্কে
দীনদয়াল উপাধ্যায়ের ৭২ ফুট উঁচু মূর্তি উন্মোচন করেছেন। রাহুল তাঁর ট্রেন-যাত্রাকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-র অঙ্গ বলে তুলে ধরেছেন। আর মোদী বলেছেন, গরিব ও প্রান্তিক মানুষের সেবায় তিনি দীনদয়ালের দেখানো পথেই চলছেন।