ভিনু পালিওয়ালের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া ছবি।
গতি! আরও গতি! আরও...
এই একটি মাত্র শব্দেই বিশ্বাস ছিল তাঁর। আস্থাও রাখতেন সেই ‘গতি’র উপর। কাজেই রাজপথে তাঁর হার্লে ডেভিডসনের স্পিডোমিটারের কাঁটা নামত না কখনই। অ্যাকসেলেটরে মোচড় দিয়ে ঝড় উঠত তাঁর চাকায়। বেশির ভাগ সময়েই স্পিডোমিটারের কাঁটা ছুঁয়ে থাকত ১৮০-র ঘর, আর সেটাই একটা সময় তাঁকে নয়া পরিচিতি এনে দেয়, লেডি অব হার্লে। ১৮০ তে যে সফরের শুরুয়াত, মাত্র ৪৪-এই থমকে যেতে পারে, সেই গতি?
বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেকেই। এ ভাবে শেষ হয়ে যেতে পারে ভিনু পালিওয়ালের লম্বা সফর! রাস্তা মসৃণ হোক বা পাথুরে, হার্লে ডেভিডসন নিয়ে পথ চলাই ছিল তাঁর নেশা। কিন্তু, সোমবার সন্ধ্যায় ভোপালের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন ভিনু। প্রায় ১৮০ স্পিডে থাকা বাইক স্কিট করে যায়। প্রোটেকটিভ গিয়ার থাকা সত্ত্বেও গুরুতর আহত হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে রেফার করা হয় বিদিশা জেলা হাসপাতালে। সেখানেই চিকিত্সকেরা জানিয়ে দেন, আর বেঁচে নেই গতির রানি ভিনু। মাত্র ৪৪-এই শেষ হয়ে যায় তাঁর গতির সফর।
রাজস্থানের জয়পুরের ভিনুই ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা বাইকার। অথচ কলেজে পড়ার আগে তিনি বাইক চালাতেই জানতেন না। সেই সময় থেকেই বাইকের প্রতি ঝোঁক বাড়তে থাকে তাঁর। বন্ধুর বাইক নিয়ে তা চালানো শিখলেন। আর নেশার সেই শুরু। এর পর তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু স্বামী পছন্দ করতেন না, তিনি বাইক চালান। কিছু দিন বাইক চালানো বন্ধ রাখার পর তিনি বাইক-প্যাশনের কারণে সম্পর্ক থেকেই বেরিয়ে আসেন। তাঁদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এর পর ফের বাইক চালানো শুরু করেন দুই সন্তানের মা ভিনু। দেশজুড়ে মোটরবাইক জার্নি নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরির পরিকল্পনাও ছিল তাঁর। আচমকাই সেই সফর শেষ হয়ে যাওয়ায় তাঁর আশা আর পূরণ হল না!