বীণা জর্জ।
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে হাত বদল ঘটানো হল। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে প্রতিষ্ঠিত মহিলা মুখের জায়গায় নবীন মহিলা মুখই নিয়ে এল কেরল সিপিএম।
কে কে শৈলজার জায়গায় এ বার কেরলের নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হচ্ছেন বীণা জর্জ। পূর্বাশ্রমে শৈলজা ছিলেন শিক্ষিকা। আর পুরোদস্তুর রাজনীতিতে আসার আগে দীর্ঘ দিন বীণা ছিলেন সাংবাদিকতায়। নতুন দায়িত্ব পেয়ে বীণা বলেছেন, ‘‘সদ্যপ্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী শৈলজার পরামর্শ নিয়েই এই কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ শুরু করতে চাই। ব্যক্তি নয়, পুরোটাই এখানে টিম ওয়ার্ক।’’
মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বাদে মন্ত্রিসভায় এ বার সব মুখই বদলে দিয়েছে সিপিএম। বিজয়নের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ হওয়ার কথা আজ, বৃহস্পতিবার। তার আগের দিন এলডিএফ বৈঠকে মন্ত্রীদের মধ্যে দফতর বণ্টন চূড়ান্ত হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী, প্রাক্তন সাংসদ কে এন বালাগোপাল পেতে চলছেন অর্থ দফতরের দায়িত্ব। দু‘বারের বেশি দফার বিধায়কেরা আর প্রার্থী হবেন না— দলের এই নীতি মেনে কেরলের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াইয়ে অন্যতম পরিচিত মুখ টমাস আইজ়্যাক এ বার ভোটে দাঁড়াননি। রাজ্যসভায় সিপিএমের আর এক প্রাক্তন সাংসদ পি রাজীবকে কেরলের শিল্প ও বাণিজ্য এবং আইন দফতরের জোড়া দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবনকুট্টি, উচ্চ শিক্ষায় আর বিন্দু। ডিওয়াইএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি মহম্মদ রিয়াস হতে চলেছেন নতুন পূর্তমন্ত্রী। দেবস্বম এবং অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে কে রাধাকৃষ্ণনকে। কেরলে মন্দির-সহ বিভিন্ন ধর্মস্থান সংক্রান্ত বিষয়ের দেখভাল ও সমন্বয় করে দেবস্বম দফতর। সেই দফতরের দায়িত্বে ‘সারা ভারত দলিত শোষণ মুক্তি মঞ্চের’ নেতা রাধাকৃষ্ণনকে নিয়ে আসা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভা থেকে শৈলজার বিদায় নিয়ে সিপিএমের অন্দরে বিতর্ক অবশ্য পুরোপুরি মেটেনি। করোনা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মহলের প্রশংসা অর্জনকারী শৈলজাকে কোভিড পরিস্থিতির সময়ে বাদ দেওয়া খুব প্রয়োজন ছিল না, এমন মতের শরিক দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিটবুরো সদস্য বৃন্দা কারাটেরাও। তেমনই মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের জামাই রিয়াস বা ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক এ বিজয়রাঘবনের স্ত্রী বিন্দুর মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া ভুল বার্তা দিতে পারে বলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা। যদিও রিয়াস, বিন্দুরা রাজনীতিতে নিজেদের জায়গা আগেই তৈরি করে ফেলেছেন। ভিন্ন মত থাকলেও দেশের একমাত্রা যে রাজ্যে দলের সরকার রয়েছে, সেখানে জট তৈরি করতে চাইছেন না কেন্দ্রীয় নেতারা। ইয়েচুরি বলেছেন, মন্ত্রিসভা কী ভাবে গঠন করা হবে, সেটা সংশ্লিষ্ট রাজ্য কমিটিরই এক্তিয়ারে পড়ে।
পরিস্থিতি দেখে দলেরই কেউ কেউ বলছেন, ‘‘দিল্লির এ কে জি ভবনের চেয়ে এখন তিরুঅনন্তপুরমের এ কে জি সেন্টারের মত ভারী!’’