রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। —ফাইল চিত্র।
হিমাচল ও কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী দলের মুখ হওয়া সত্ত্বেও হেরেছিল বিজেপি। তবুও ভোটমুখী রাজস্থানে মোদীকে সামনে রেখেই লড়ার পক্ষপাতী রাজ্যের অধিকাংশ নেতা। এ দিকে সূত্রের দাবি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে আজ দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে নিজেকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেছেন।
রাজস্থানে দলীয় কোন্দলে বিজেপি জেরবার। বসুন্ধরা-বিরোধী শিবির চাইছে, প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখেই ভোটে নামুক দল। এক নেতার কথায়, ‘‘রাজ্যে দলের একাধিক গোষ্ঠী। কোনও গোষ্ঠীর নেতাকে তুলে ধরলে অন্য গোষ্ঠীগুলির বসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে মুখ করে লড়াই করা হোক।’’
এ দিকে বসুন্ধরার শিবির আগাগোড়া তাঁকেই সামনে রেখে লড়ার পক্ষপাতী। তাদের যুক্তি, কোনও এক জন নেতার নেতৃত্বে লড়াই হলে নিচু তলায় বিভ্রান্তি কম হবে। সূত্রের মতে, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের সঙ্গে বৈঠকে সেই বার্তাই আজ দিয়েছেন বসুন্ধরা। কুর্সির দৌড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াতও।
বিজেপির আশঙ্কা, রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট আলাদা দল গড়ে আপ ও হনুমান বেনিওয়ালের রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টির সঙ্গে জোট করে লড়তে পারেন। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস-বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা। তবে জয় নিয়ে আশাবাদী বিজেপি। এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘গত বার পূর্ব রাজস্থান ও মরু অঞ্চলে খারাপ ফল করেছিল বিজেপি। মরু অঞ্চলে ২০১৭ সালে স্থানীয় সমাজবিরোধী আনন্দ পাল সিংহের এনকাউন্টারে মারা যাওয়ার ঘটনায় রাজপুত ভোট তৎকালীন শাসক দল বিজেপির বিপক্ষে যায়। পূর্ব রাজস্থানে সচিনের জন্য ভাল ফলকরেছিল কংগ্রেস।
বিজেপির চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্ক গুজ্জরেরা তাঁদের সমাজের ছেলে সচিনের সমর্থনে এগিয়ে আসেন, দল জিতলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন ভেবে। মিনা সমাজের ভোট কংগ্রেস বরাবরই পেয়ে থাকে। সে যাত্রায় পূর্ব রাজস্থানে ২৬টির মধ্যে ২৫টি আসনে কংগ্রেস জেতে।’’ কিন্তু এ বার গুজ্জরেরা বিজেপির পাশেই দাঁড়াবেন বলেই আশাবাদী ওই বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘সচিনকে নিয়ে রাজনীতিতে গুজ্জরেরা অসন্তুষ্ট।’’
দ্রুত রফাসূত্র না বেরোলে ১১ জুন পিতা রাজেশ পাইলটের মৃত্যুদিবসে সচিন প্রগতিশীল কংগ্রেস নামে নতুন দল ঘোষণা করতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। ঘনিষ্ঠ শিবির বলছে, হাই কমান্ড সচিনকে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে বললেও তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে ধোঁয়াশাই রয়েছে। তাতে অসন্তুষ্ট সচিন শিবির। কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল আজ সচিনের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর দাবি, নতুন দল গঠনের দাবি একেবারেই গুজব।